পাকড়াও। নিজস্ব চিত্র
আদতে নেশামুক্তি কেন্দ্র। কিন্তু তারই আড়ালে চলছিল জুয়ার ঠেক। শনিবার গভীর রাতে কুলটি থানার নিয়ামতপুর এলাকায় ওই কেন্দ্রে হানা দিয়ে এমনই তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, কেন্দ্রটির মালিক-সহ মোট আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, নিয়ামতপুরের লিথুরিয়া রোডের উপরে অবস্থিত ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রটি প্রায় পাঁচ বছর আগে খোলা হয়। দোতলা ভবনের ওই কেন্দ্রেরই একটি ঘরে রাতে জুয়ার ঠেক বসেছিল বলে পুলিশ জানায়। গোপন সূত্রে সেই খবর পেয়ে অভিযান চালায় নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশ জানায়, আট জনকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি তিনটি মোটরবাইক, একটি গাড়ি এবং প্রায় তিরিশ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, জুয়ার ঠেক চলার সময়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন নেশামুক্তি কেন্দ্রের মালিক কমলজিৎ নোনিয়া। তবে সেখানে কোনও রোগী ছিলেন না। পুলিশের দাবি, জেরায় তাদের কাছে কমলজিৎ স্বীকার করেছেন, তিনি নিয়মিত সেখানে জুয়ার ঠেক বসাতেন।
রবিবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকাবাসীর সূত্রে আরও কিছু তথ্য মিলেছে বলে পুলিশ জানায়। পুলিশ জানায়, এক ব্যবসায়ীর থেকে তাঁরা জানতে পারেন, ওই কেন্দ্রে নিয়মিত বহিরাগত কিছু লোকজনের যাওয়াআসা ছিল। প্রতিদিনই নতুন নতুন মুখ দেখে এলাকাবাসীর সন্দেহ বাড়ে। তার পরেই বিষয়টি তাঁরা পুলিশের নজরে আনেন। পুলিশ জানায়, দিন কয়েক ধরে ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রের দিকে নজর রাখা হচ্ছিল। কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘ধৃতদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করা হচ্ছে।’’
কিন্তু এই পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীর প্রশ্ন, নেশামুক্তি কেন্দ্রে কী ভাবে চলছিল জুয়ার ঠেক? কী ভাবেই বা ওই কেন্দ্র খোলার অনুমতি মিলেছিল? বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অরিন্দম রায় জানিয়েছেন, জেলায় নেশামুক্তি কেন্দ্র খোলার বিষয়ে সে ভাবে প্রশাসনিক অনুমতি নেওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। জেলায় সরকারি এমন কোনও কেন্দ্র নেই। নিজস্ব উদ্যোগে কেউ খুলে থাকতে পারেন। সমস্যা মেটাতে অনেকেই সেখানে রোগী নিয়ে যান। তবে নেশা মুক্তিকেন্দ্রের আড়ালে জুয়ার আসর বসানোর এই ঘটনা অত্যন্ত চিন্তাজনক। জেলায় এমন আর কোনও কেন্দ্র রয়েছে কি না, সে বিষয়ে খোঁজখবর করে সেগুলিতে নিয়মিত অভিযান চালানোর দরকার।