গলসিতে ভেঙেছে বাড়ি। নিজস্ব চিত্র
ঝড়ে টানা বিদ্যুৎহীন জেলার অধিকাংশ এলাকা। বর্ধমান শহর তো বটেই একাধিক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে, তার ছিঁড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। রবিবার রাত থেকে টানা বিদ্যুৎ নেই কালনা মহকুমা হাসপাতাল ও একাধিক গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কালনা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই জানান, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেনারেটরে কাজ চালানো গিয়েছে। তবে সারা রাত বিদ্যুৎ না এলে পরিস্থিতি সামলানো যাবে না।
বর্ধমান শহরে রবিবার সন্ধে ৬টা থেকে বিস্তীর্ণ এলাকায় অন্ধকার। বারো ঘন্টা পরেও শহরের অনেক জায়গা অন্ধকার ছিল। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান শহরে ৪৫টি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছ, ১০৯টি জায়গাতে তার ছিড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ পরিষেবা বির্যস্ত হয়ে পড়েছে। জেলার হিসেবে ৭২৮টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে, ৭৩৫ জায়গায় তার ছিঁড়েছে, হাইটেনশন লাইনের ১৪৫ জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১২টি সাবস্টেশনও ঝড়ের জন্য ক্ষতির মুখে পড়েছে। দফতরের রিজিওনাল ম্যানেজার মানিক পাল বলেন, “ক্ষতির হিসেব আরও বাড়তে পারে। হাজার খানেকের বেশি কর্মী রবিবার রাত থেকে পরিশ্রম করছেন। তবে সব জায়গাতে সমান ভাবে বিদ্যুৎ পৌঁছবে না।”
মঙ্গলকোটের বনকাপাশিতে বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুও হয় এক মহিলার। দেহ নিয়ে ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে পুলিশ এসে বিক্ষোভ তোলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সকালে পুকুর পাড় দিয়ে পাতা কুড়িয়ে ফেরার সময় তার মাথায় লেগে উত্তরপাড়ার মৌসুমী মাঝি (৩২) মারা যান। বিশ্বজিৎ মাঝি, লালু মাঝিরা বলেন, ‘‘পড়ে থাকা তারে সকাল থেকেই বিদ্যুৎ চার্জ করছিল দফতরের কর্মীরা। আমরা বারন করাতেও শোনেনি। ওখান থেকে তার সরিয়ে নিয়ে চালু করা গেলে এভাবে মৃত্যু ঘটত না।’’ নতুনহাট বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিক অভিনন্দন বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘১১ কিলো ভোল্টের ফিডার ক্ষতিগ্রস্ত ১০-১২টি গ্রামের বিদ্যুত পরিষেবা ব্যহত হয়েছে। কারা ওখানে কাজ করছিলেন খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’ কালনায় বিদ্যুত দফতরের সাতটি দল সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেছে। তাতেও শহরের একাংশ এবং বহু গ্রামে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। তার ছিঁড়ে টেলিফোন পরিষেবাও বিপর্যস্ত হয় বেশ কিছু জায়গায়।