হাতে ফিতে, জিপিএস, খাতা, পেনসিল। ভোর হতেই জঙ্গলের ভিতর ঢুকে হাতি গুনতে শুরু করছেন কর্মীরা। চার দিন ধরে এ ভাবেই হাতিসুমারি চলল বন দফতরের বর্ধমান বিভাগের দুর্গাপুর, পানাগড় ও গুসকরা রেঞ্জে।
দক্ষিণবঙ্গে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া কিংবা মেদিনীপুরে হাতিসুমারি হলেও বর্ধমান বিভাগে হাতি গণনার কাজ এই প্রথম। বর্ধমানের বিভাগীয় বনাধিকারিক বিজয়কুমার শালিমঠ বলেন, “শুধু হাতির সংখ্যা নয়, কোথায় কোথায় হাতি ঘুরে বেড়ায়, কোন সময় হাতি আসে-যায় সেই তথ্যও উঠে আসে এই সুমারিতে।”
মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া সুমারির শেষ দিন, শুক্রবার বন দফতরের কর্মীরা হাতির মল খুঁজে বেড়িয়েছেন। তারপর সাদা চুন দিয়ে চারিদিকে দাগ দিয়ে মাপজোক করে সেই নমুনা সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। বন দফতরের বর্ধমান বিভাগের অতিরিক্ত আধিকারিক সুজিত দাস বলেন, “গত কয়েক দিন ধরে টানা ঝড়বৃষ্টিতে বিভিন্ন রকমের নমুনা সংগ্রহে সমস্যা হয়েছে। কারণ মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছে, এমন মলের নমুনা সংগ্রহ করা যায় না।”
পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়—একসঙ্গে চার রাজ্যে হাতি গণনার কাজ হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কাজ করছেন কর্মীরা। প্রথম দিন হাতির করিডরে ‘জিগজ্যাগ’ পদ্ধতিতে মাপজোক করার পর পঞ্চাশ মিটার অন্তর ‘ব্লকিং’ করেছেন তাঁরা। দ্বিতীয় দিন ওই জায়গা থেকে চারিদিকে তাকিয়ে হাতি খোঁজা হয়েছে। তৃতীয় দিনে হাতি যেখানে জল খেতে আসে, সেখানে মাচা বেঁধে হাতি গোনা, ছবি তোলার নির্দেশ ছিল। চার বছর অন্তর হাতি গণনার কাজ করে বন দফতর।
জানা গিয়েছে, বর্ধমানের দুর্গাপুর রেঞ্জের শিবপুর ও মলানদিঘি বিটে, পানাগড় রেঞ্জের খন্ডারি বিট, আদুরিয়া বিট ও গুসকরা রেঞ্জের প্রতাপপুর ও আউশগ্রাম বিটে মোট ২৪ জন কর্মী ৬টি দলে ভাগ হয়ে চার দিন ধরে হাতি খুঁজেছেন। বিভিন্ন রকম নমুনা সংগ্রহ করেছেন। ওই সব তথ্য পাঠানো হবে সংশ্লিষ্ট দফতরে। তারা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে সম্পূর্ণ রিপোর্ট তৈরি করবে।