flood: ‘রাস্তায় উঠে দেখলাম ঘরটা  ডুবে গেল’

ঘরটার ডুবে যাওয়াটা চোখে ভাসছে। কান্না গিলে বসে আছি আমরা।

Advertisement

কটি মাঝি

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৪১
Share:

কেতুগ্রামের চরখিতে গ্রাম ভেসেছে, রাস্তায় দাঁড়ানো ট্রাকে ঠাঁই নিয়েছেন বাসিন্দারা। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

বানভাসি রাত কাটালাম।হাই রোডে উঠে নিজেরা প্রাণে বাঁচলেও চোখের সামনে ডুবে গেল ঘরটা। চারিদিকে কান্নার আওয়াজ। আমাদের মতোই গ্রামের প্রচুর মানুষ ততক্ষণে রাস্তার ধারে তাঁবু খাটাতে শুরু করেছেন। আমরাও বাঁচিয়ে আনতে পারা খাবার-দাবার, জিনিসপত্রের পোঁটলা নিয়ে একটা ট্রাকে উঠে পড়ি।

Advertisement

সপ্তাহ খানেক আগে একটানা বৃষ্টি হয়েছিল। গত কয়েক দিন আকাশ কালো থাকলেও বৃষ্টি তেমন হয়নি। অজয়ের ধারে বাড়ি হওয়ায় প্রকৃতির চরিত্র কিছুটা জানি। ধরেই নিয়েছিলাম, এ বারে বন্যা হবে না। সংসারের কাজ সেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। প্রতিবেশীদের চিৎকারে সন্ধ্যা নাগাদ ঘুম ভাঙে। স্বামী জিনিসপত্র গোটাতে বলেন। বেরিয়ে দেখি, অজয় ঘরের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। জিনিস গোছাতেই রাত সাড়ে ১২টা বেজে যায়। আশপাশের বেশ কিছু কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে শুনতে পাই। আমাদের বাড়িতেও কোমর জল তখন। এক প্রতিবেশী এসে জানান, বিল্বেশ্বর ও রসুইয়ের তিন জায়গায় অজয়ের বাঁধ ভেঙেছে। ভয়ে হাড় হিম হয়ে যায়। ঘরের জলও বুক সমান ততক্ষণে। আগেই ছেলেমেয়েদের বাইরে বার করে দিয়েছিলাম। আমরা দু’জনও পাকা রাস্তায় উঠে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি, ঘরটা ডুবে গেল! একটি দেওয়ালও ভেঙে গিয়েছে। রাত থেকে কাটোয়া-কেতুগ্রাম হাই রোডেই আছি। রাস্তার পাশে দাঁড়ানো ট্রাকে অনেকেই উঠতে থাকেন। সংসার পাতি সেখানে।
শুক্রবার সকালে ত্রাণ আসে কলা, পাউরুটি। প্রশাসনের কাউকে দুপুর পর্যন্ত আসতে দেখিনি। তবে একের পর এক ট্রাক্টরে বালির বস্তা আসায় সাহস পাই, গ্রামটা বেঁচে যাবে। দুপুরে তৃণমূলের লোকেরা এসে খিচুড়ি, তরকারি দেয়। কিন্তু ঘরটার ডুবে যাওয়াটা চোখে ভাসছে। কান্না গিলে বসে আছি আমরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement