প্রেসক্রিপশনে একাধিক ডিগ্রি, চেম্বারের বাইরে বড় বড় করে লেখা ডাক্তার। দিব্যি চলছিল কাটোয়ার কাছাড়ি রোডের দাঁতের ডাক্তারখানা। কিন্তু চারিদিকে ভুয়ো ডাক্তারের খবর চাউর হতেই পাঁচ দিন বন্ধ চেম্বার। খুলতেই দেখা গেল, ডাক্তার এক, কিন্তু বদলেছে ডিগ্রি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দিন সাতেক আগে প্রেসক্রিপশনে ডিগ্রি বদল নজরে আসে এক রোগীর। কাছারি পাড়ার বাসিন্দা ওই রোগীই অন্যদের সামনে বিষয়টি আনেন। ওই রোগী জানান, আগে প্রেসক্রিপশনে দেখেছিলেন ওই ডাক্তার ‘বিডিএস’। কিন্তু কিছুদিন আগে ভাইপোর দাঁতের চিকিৎসার জন্য গিয়ে দেখেন ডিগ্রি হয়েছে ‘বিডিএসএ’। তাঁর দাবি, ‘‘ওঁর ওষুধ খেয়ে দাঁতে সংক্রমণ বেড়ে যায়। পরে অন্য চিকিৎসককে দেখিয়ে ভাইপোকে সুস্থ করা হয়’’ প্রশাসনের পদক্ষেপেরও দাবি তুলেছেন তিনি।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন অন্য রোগীরাও। তাঁদের দাবি, বছর দশেক ধরে ওই এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে চেম্বার করছেন মাস্টার পাড়ার ওই দাঁতের ‘ডাক্তার’। তাঁর প্রেসক্রিপশনে এত দিন বিডিএস (ক্যাল), সিইআরপি (এডিএ), সিডিটি (কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়) লেখা ছিল। তবে ছিল না রেজিস্ট্রেশন নম্বর। ব্যস্ত রাস্তায় চেম্বার হওয়ায় পসারও চলছিল ভালই। কিন্তু ভুয়ো ডিগ্রি নিয়ে এত দিন কী ভাবে চলল সে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
ওই ডাক্তারের যদিও জবাব, ‘‘আগের প্রেসক্রিপশন ছাপায় ভুল ছিল। তাই ওটুকু শুধরে নিয়েছি।’’ তবে এই ক’দিন পালিয়ে ছিলেন কেন? তাঁর উত্তর, ‘‘পালাব কেন? আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম।’’
বিসিডিএ-র কাটোয়া শাখার সম্পাদক শমীন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওঁর রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই। ওষুধ লিখছেন কি করে!’’ তিনি আরও জানান, ডাক্তারের রেজিস্ট্রেশন নম্বর মে়ডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার ওয়েবসাইটে যাচাই করে তবেই দোকানে বসতে দেওয়া হয়। শহরের ৩৫টি ওষুধ বিক্রেতাকে এই নিদান দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা কবিতা শাসমল।