বিপজ্জনক: এই ধরনের ছাউনির নীচেই চলে বিকিকিনি। মঙ্গলবার।
কাছেই একটি ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন প্রায় তেরো জন। আচমকা ঘুম ভাঙে চিৎকারে, ‘আগুন আগুন।’ ঘুম চোখেই বাইরে বেরিয়ে এসে দেখা যায়, দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। সোমবার গভীর রাতে এমনই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে দুর্গাপুরের বেনাচিতির ঘোষ মার্কেটে। দমকলের ছ’টি ইঞ্জিনের ঘণ্টা চারেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
কী ঘটে ওই রাতে? ওই বাজারের দোতলায় থার্মোকল ও শালপাতার থালাবাটির একটি গুদাম রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, রাত ১২টা নাগাদ ওই গুদাম থেকে আচমকা আগুন বের হতে দেখেন কয়েক জন। এর পরেই ওই গুদামের পিছন দিকে থাকা দু’টি ঘরে ঘুমন্ত বেকারি কর্মীদের ডেকে তোলেন কয়েক জন। মূল দরজায় আগুন ধরায় দীর্ঘ দিনের অব্যবহৃত পুরনো একটি দরজা খুলে তাড়াহুড়ো করে বেরোতে গিয়ে পায়ে চোট পান এক জন। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পাশের দু’টি গুদামের দরজা-জানলাতেও।
ঘটনার খবর পেয়ে দু’টি দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। মই দিয়ে উপরে উঠে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন দমকলকর্মীরা। আরও ইঞ্জিন আনার দাবি জানান স্থানীয়রা। দমকল সূত্রে জানা যায়, এলাকায় জলের উৎস না থাকায় ইঞ্জিনে মজুত জলের উপরেই নির্ভর করতে হয়। জল ফুরিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে আসে আরও চারটি ইঞ্জিন আসে। প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় ভোর রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
দাউদাউ: বেনাচিতি বাজারের গুদাম। সোমবার রাতে।
আগুন ধরার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মধুসূদন মণ্ডল। তাঁর দাবি, ‘‘বাজারের নানা জায়গায় বিদ্যুতের তারের জট লেগে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’ বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গে কথা বলারও আশ্বাস দেন তিনি। দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকে কোনও ভাবে আগুন ধরেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত মালিক সুনীল সেন জানান, ভাড়াবাড়িতে গুদামটি রয়েছে। ঘরের বাইরে বারান্দাতেও জিনিসপত্র রাখা ছিল। তাঁর দাবি, ‘‘সব পুড়ে গিয়েছে’’। তাঁর দাবি, গুদামের পিছনে দু’টি ঘরে স্থানীয় একটি বেকারির কর্মীরা থাকেন। সেখান থেকেও অসাবধানতাবশত আগুন ধরে থাকতে পারে বলে দাবি তাঁর। যদিও বেকারি কর্মী সাদাদুল্লা খানের দাবি, ‘‘অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গেই আগুন ব্যবহার করি আমরা।’’
ব্যবসায়ীদের আরও দাবি, আগুন নেভাতে গিয়ে দমকলের জলের তোড়ে দীর্ঘদিনের পুরনো ভবনটির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাড়িটির নীচে মাছের আড়ত আছে। মৎস্য ব্যবসায়ী কালিদাস ধীবর বলেন, ‘‘দেওয়াল দিয়ে জল চুঁইয়ে পড়ছে। ভয়ে আলো-পাখা বন্ধ করে রেখেছি।’’
—নিজস্ব চিত্র।