‘আনন্দমেলা’র টানে স্কুলে ছাত্রছাত্রীরা

স্কুলের মাঠে গিয়ে দেখা গেল, স্টল সাজিয়ে বসেছে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। ‘পিঠে খেলে পেটে সয়’, ‘ঘুরে যাও আন্টার্কটিকা’, ‘ফ্রেশ অ্যান্ড জুসি’— সবই স্টলের নাম।

Advertisement

অর্পিতা মজুমদার

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৩৭
Share:

আনন্দে: বিজড়া হাইস্কুলে খাওয়াদাওয়া। ছবি: বিকাশ মশান।

কেউ ব্যস্ত হরেক কিসিমের খাবার সাজাতে। কেউ বা খাবার কিনতে ‘কুপন’ কাটায় ব্যস্ত। ওরা সকলেই পড়ুয়া। শুক্রবার দুর্গাপুরের বিজড়া হাইস্কুলে ‘আনন্দমেলা’ নামে এমন খাবারের উৎসব চলল পড়ুয়াদের উদ্যোগে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই পরিকল্পনার ফলে এ বার পুজোর আগে ক্লাসে উপস্থিতির হারও ঠেকানো গিয়েছে।

Advertisement

স্কুলের মাঠে গিয়ে দেখা গেল, স্টল সাজিয়ে বসেছে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। ‘পিঠে খেলে পেটে সয়’, ‘ঘুরে যাও আন্টার্কটিকা’, ‘ফ্রেশ অ্যান্ড জুসি’— সবই স্টলের নাম। সেখানে মহা উৎসাহে নিজেদের পসরা সাজিয়ে বসে সীমা হাজরা, তনু বাউরি, আশিস মাহালদের মতো পড়ুয়ার দল। তাদের কথায়, ‘‘স্কুলে এমন কিছু হবে, ভেবেই খুব আনন্দ হচ্ছে।’’ মোট ১০টি স্টল রয়েছে। রয়েছে ফুচকা, চিঁড়ের পোলাও, তেলেভাজা, মোমো, পিঠে-সহ নানা খাবার। পড়ুয়ারাই বাড়ি থেকে খাবার তৈরি করে এনেছে। আইশক্রিম ছাড়া সবকিছুরই দাম পাঁচ টাকা। খাবার কিনতে গেলে, আগে অবশ্যই কুপন কাটা বাধ্যতামূলক।

কিন্তু কেন এমন আয়োজন? শিক্ষকেরা জানান, ফি বছর পুজোর ছুটির আগে পড়ুয়াদের উপস্থিতি তলানিতে ঠেকে। এ বার তাই এমন ‘অভিনব’ পরিকল্পনা নেওয়া হয়, যাতে স্কুলমুখী হয় পড়ুয়ারা। এর জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিয়ে তৈরি করেন তহবিল, ‘আনন্দমেলা’র আয়োজনে। প্রধান শিক্ষক কাজি নিজামুদ্দিন বলেন, ‘‘কয়েক সপ্তাহ আগে পড়ুয়াদের পরিকল্পনার বিষয়ে জানানো হয়। খাবার তৈরি থেকে স্টলে টেবিল সাজানো, সবেতেই সাহায্য করেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।’’ শিক্ষকেরা জানান, খাবার সবই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে পড়ুয়াদের পরিচ্ছন্নতার পাঠও দেওয়া হয়েছে। খাবার বিক্রি করে লাভ হলে তা দিয়ে পড়ুয়াদেরই খাওয়ানো হবে।

Advertisement

এ দিন প্রথম ঘণ্টার ক্লাসের শেষে শুরু হয় মেলা। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্য বছর এই সময়ে উপস্থিতির হার থেকে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ। এ বার তা ৯০ শতাংশে ঠেকেছে। শিক্ষিকা কাকলি ধারা, তৃপ্তি বিশ্বাসরা বলেন, ‘‘আমরা সাহায্য করেছি ঠিকই। কিন্তু ছেলেমেয়েদের পরিশ্রমেই এই সাফল্য।’’ আনন্দমেলা শেষে পুজোর ছুটিও শুরু হয়ে গেল স্কুলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন