বাড়ছে চাহিদা, জোর চারাপোনা চাষে

মাছে-ভাতে বাঙালি।রুই-কাতলা হোক, বা চারা পোনা— ভাতের পাতে এক টুকরো মাছ না পড়লে খাওয়া সম্পূর্ণ হয় না বাঙালির। যদিও মফস্‌সলের অনেক ক্রেতারই অভিযোগ, ভিন রাজ্যের চালানি মাছে ভরেছে বাজার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৬ ০০:১৮
Share:

চলছে মাছ চাষ। —নিজস্ব চিত্র।

মাছে-ভাতে বাঙালি।

Advertisement

রুই-কাতলা হোক, বা চারা পোনা— ভাতের পাতে এক টুকরো মাছ না পড়লে খাওয়া সম্পূর্ণ হয় না বাঙালির। যদিও মফস্‌সলের অনেক ক্রেতারই অভিযোগ, ভিন রাজ্যের চালানি মাছে ভরেছে বাজার। নিয়মিত দেশি রুই, কাতলা পাওয়া যায় না। এ বার তাই সেই দেশি মাছের স্বাদ ফেরাতে বিশেষ উদ্যোগ করা হচ্ছে কাটোয়া ২ ব্লকে।

ব্লক মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া ২ ব্লকের দাঁইহাট ছাড়াও কাটোয়া ১ ব্লকের মুস্থুলি, আক্রা, শ্রীখণ্ড, সুদপুরের একাধিক পুকুরে দেশি পোনা চাষ হচ্ছে। বছরে ৬-৭ মাস দেশি পোনা চাষ হলেও মূলত বর্ষাকালেই মাছ চাষে ঝোঁক বেশি। মাছ চাষি কাশীনাথ হাজরা জানান, কিছুটা ব্লক প্রশাসনের সাহায্যে ও বাকিটা নিজেদের উদ্যোগে রুই, মৃগেল, ট্যাংরা, কাতলা মাছের চাষ হচ্ছে। তাঁর দাবি, হ্যাচারি থেকে ডিম এনে বা ব্লক প্রশাসনের দেওয়া ডিম ১৫ দিন চাষ করে সুস্বাদু ধানিপোনা মিলছে। দাঁইহাট, সালার, কাগ্রামের মতো বোলপুর, গুসকরা, দুর্গাপুর,আসানসোল এমনকী বিহার, ঝাড়খণ্ডেও পাড়ি দিচ্ছে এইএলাকার চারাপোনা।

Advertisement

দাঁইহাটের বন্দ্যোপাধ্যায় পাড়ার বাসিন্দা মাছচাষি পরেশনাথ হালদারের কাছে জানা গেল দেশি পোনা চাষের পদ্ধতি। তাঁর কথায়, প্রথমে মহুয়া, চুন দিয়ে পুকুর পরিষ্কার করার পরে পোকা মারার জন্য কেরোসিন তেল দেওয়া হয়। এরপরে আঁতুড়পুকুরে ডিম ছেড়ে ৫ দিন পর সারিন জাল দিয়ে ও তার ৯ দিনের মাথায় চটজাল দেওয়া হয়। তারপরে ফেলা হয় চারা। চারা ২ ইঞ্চি হলে কেজিতে ১১০ টাকায় ও ৪-৫ ইঞ্চি হলে কেজিতে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয় বলেও তাঁর দাবি। আর এক মাছচাষি বৈদ্যনাথ মাঝির কথায়, ‘‘এই চারাই বরফ, ফর্মালিন দিয়ে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে।’’ চৈত্রমাসে উৎপাদন কম বলে দাম বেশি মেলে বলেও তাঁর দাবি।

কাটোয়ার বড়বাজারে গিয়েও দেখা গেল কম টাকায় চালানি মাছ কেনার থেকে দেশি পোনার দিকেই ক্রেতাদের নজর বেশি। বিক্রেতাদেরও দাবি, চাহিদা বেশি হওয়ায় পর্যাপ্ত জোগান রাখতে হচ্ছে। দুশো-আড়াইশো টাকা কেজিতে দেদার তা বিকোচ্ছে।

কাটোয়া ২ ব্লকের মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক অসীম নন্দী জানান, মাস তিনেক আগে ব্লকের চাষিদের ৬০ ইউনিট ডিম দেওয়া হয়েছিল। আরও ৫০ ইউনিট দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়াও মাছের খাবার, চূন, ৭০ জন মাছ বিক্রেতাকে মাছ টাটকা রাখার জন্য ‘ইনসুলেটেড বক্স’ দেওয়া হয়েছেৃ। বিডিও শিবাশিস সরকারও বলেন, মাছে চাষে আগ্রহ বাড়ছে। প্রশাসনের তরফেও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে সাহায্য করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন