তখন জ্বলছে দোকান। নিজস্ব চিত্র
ভোরে আগুন লেগে ছাই হয়ে গেল বার্নপুরের চারটি দোকান। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন প্রায় দু’ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। কী ভাবে আগুন লাগল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ও দমকল। তাদের প্রাথমিক অনুমান, আতসবাজির ফুলকি থেকে এমনটা ঘটে থাকতে পারে।
হিরাপুর থানার অদূরে বার্নপুর ডেলি মার্কেট লাগোয়া এলাকায় ইস্কো রোড ঘেঁষে রয়েছে ওই চারটি দোকান। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ভোর ৪টে নাগাদ আগুন লেগে যায় সেগুলিতে। দোকানগুলির পাশেই রয়েছে একটি বহুতল আবাসন। সেখানকার বাসিন্দারা পুলিশকে জানান, ভোরে তাঁরা দোকানগুলিতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখেন। সেই সঙ্গে বিকট আওয়াজ হচ্ছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। খবর দেওয়া হয় দমকলে। প্রথমে ইস্কো কারখানার একটি ইঞ্জিন পৌঁছয়। কিছুক্ষণ পরে আসানসোল থেকে রাজ্য দমকলের আরও একটি ইঞ্জিন আসে। দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে তারা।
সোমবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশ মেরামতির পোড়া দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলছেন মালিক জয় চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘এই দোকানের আয় থেকেই সংসার চলে। সামনেই পুজো। এই সময় এমন বিপর্যয় ঘটবে কল্পনাও করিনি। সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম।’’ ডিমের দোকানের আয়ে মা, বাবা, ভাই, বোনকে নিয়ে সংসার চালান মহম্মদ সামসাদ। তিনি জানান, প্রতিবেশীদের কাছে আগুন লাগার খবর পেয়েই পড়িমরি দৌড়ে এসেছেন। কিন্তু কিছুই করে উঠতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘‘সামনে পুজো, তাই ধার করে বেশি ডিম রেখেছিলাম। ধার মিটবে কী করে, বুঝে উঠতে পারছি না!’’
কী ভাবে আগুন লাগল তা এখনও পরিষ্কার নয় বলে জানান দমকলের আধিকারিকেরা। আসানসোল দমকলের আধিকারিক দেবায়ন পোদ্দার শুধু বলেন, ‘‘আমরা তদন্ত করছি।’’ তবে পুলিশ ও দমকল সূত্রের খবর, স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে জানা গিয়েছে, মহালয়ার আগে এলাকায় আতসবাজি ফাটানো হচ্ছিল। তারই ফুলকি থেকে প্রথমে একটি ছবি বাঁধানোর দোকানে আগুন লাগে। তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বাকি দোকানগুলিতে। এই অগ্নিকাণ্ডে এলাকার বিদ্যুতের তার পুড়ে যাওয়ায় বেশ কিছুক্ষণ ওই অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।