দুর্ঘটনার সংখ্যা নামিয়ে আনতে হবে শূন্যে, লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ধারাবাহিক ভাবে সচেতনতা গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতির যে খুব একটা উন্নতি হয়েছে তা বলা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টে (ডিএসপি) দুর্ঘটনা ঘটছে বারবারই। হচ্ছে প্রাণহানিও।
২০১০-এর ১৪ জুলাই ২ নম্বর ব্লাস্ট ফার্নেসে বিষাক্ত গ্যাস লিক করে ২৫ জন কর্মী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ২০১২ সালে সাতটি দুর্ঘটনা ঘটে কারখানায়। মারা যান এক জন। ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর কোকওভেন প্ল্যান্টে গাইড কার ও কোক কারের গতিবিধি আগাম আঁচ করতে না পেরে এক ঠিকা শ্রমিক চাপা পড়ে মারা যান, দু’জন জখম হন। ২০১৪-র ডিসেম্বরে ৩ নম্বর ব্লাস্ট ফার্নেস পরিষ্কার করতে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাসে দুই ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
২০১৫ সালের ১২ মে কারখানার ভিতরে গলিত ধাতু ছিটকে জখম হন তিন কর্মী। পরে তিন জনেরই মৃত্যু হয়। সে বছরই ৩ জুলাই ফের দুর্ঘটনা। বেসিক অক্সিজেন ফার্নেসের কন্টিনিউয়াস কাস্টিং প্ল্যান্টে গলিত ধাতু ছিটকে দগ্ধ হন তিন জন। ২৪ জুলাই স্টিল মেল্টিং শপ (এসএমএস) বিভাগে গরম জলে পুড়ে যান চার ঠিকাকর্মী।
বারবার এ ভাবে দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে কর্মী সংগঠনগুলি। তাদের অভিযোগ, গাফিলতির জন্যই এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। ১ ডিসেম্বর কারখানার ভিতরে ট্রাকের ধাক্কায় মারা যান এক স্থায়ী শ্রমিক। ক্ষুব্ধ শ্রমিক সংগঠনগুলি মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও এক জনের চাকরির দাবি জানায়। শেষ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
সিটু অনুমোদিত ‘হিন্দুস্থান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’-এর যুগ্ম সম্পাদক সৌরভ দত্তের অভিযোগ, ‘‘একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। তদন্ত হচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। অবিলম্বে কর্তৃপক্ষের কাছে সুরক্ষা বিষয়ক বৈঠক ডাকার দাবি জানানো হয়েছে।’’ একই বক্তব্য আইএনটিইউসি এবং আইএনটিটিইউসি-র। ডিএসপি কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, ইতিমধ্যে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে।তাছাড়া শুধু নিরাপত্তা সচেতনতার শিবির নয়, ধারাবাহিক ভাবে সচেতনতা গড়ে তোলার প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে।
সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কাজের সময় প্রতিটি কর্মী যাতে উপযুক্ত নিরাপত্তা বিধি মেনে চলেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। সে ভাবেই এগোনো হচ্ছে।’’