দুই নেতাকে মার, নালিশ কোন্দলের

ঘটনাস্থলের কাছেই ছিলেন ব্লকের কার্যকরী সভাপতি তথা মন্তেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক সৈকত পাঁজার প্রতিনিধি সব্যসাচী চক্রবর্তী। তিনি ইমরানকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও বেধড়ক মারধর করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৭ ০১:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মন্তেশ্বর গৌড়মোহন কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদককে মারধরের ঘটনা ঘটল। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে প্রহৃত তৃণমূল বিধায়কের প্রতিনিধিও। তৃণমূলেরই একটি সূত্রের দাবি, দলের গোষ্ঠী-কোন্দলের কারণেই এই ঘটনা ঘঠেছে।

Advertisement

কী ঘটেছে এ দিন? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় মোটরবাইকে চড়ে কলেজ যাচ্ছিলেন সাধারণ সম্পাদক ইমরান শেখ। অভিযোগ, কুসুমগ্রামে মোটরবাইকটি ঘিরে ধরেন বাবুল শেখ ও আজমত শেখ-সহ কয়েক জন। লাঠি, রড দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয় ইমরানকে। ঘটনাস্থলের কাছেই ছিলেন ব্লকের কার্যকরী সভাপতি তথা মন্তেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক সৈকত পাঁজার প্রতিনিধি সব্যসাচী চক্রবর্তী। তিনি ইমরানকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। দু’জনকেই প্রথমে মন্তেশ্বর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অভিযোগ, এক নেতাকে শাবলও ছোড়া হয়। তবে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

এ দিনের গোলমালের কারণ, দিন কয়েক আগের একটি ঘটনা বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। দিন কয়েক আগে কলেজে ঢুকে এক ছাত্রীর সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ ওঠে বাবুল ও আজমত ঘনিষ্ঠ এক যুবকের বিরুদ্ধে। ওই যুবককে ভর্ৎসনা করেন ইমরান। এ দিনের ঘটনা, তারই ফল কি না, তা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে।

Advertisement

ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যান বিধায়ক সৈকতবাবু। তাঁর অভিযোগ, ‘‘হামলা চালিয়েছে সিপিএম। বাবুল ও আজমত এর আগেও ভয় দেখানো, মারধরের ঘটনা ঘটিয়েছে।’’ যদিও বাবুল ও আজমত, দু’জনেই এলাকায় তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত। বিধায়কের দাবি, মারধরের ঘটনা পুলিশের সামনেই ঘটেছে। তবে চার-পাঁচ জন লাঠিধারী পুলিশের পক্ষে প্রায় ৩৫ জন হামলাকারীকে ঠেকানো সম্ভব হয়নি বলে সৈকতবাবু জানান। বাবুল ও আজমত-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

এসএফআই নেতা সৌমেন কার্ফার দাবি, ‘‘এটা ওদের গোষ্ঠী-কোন্দলের ফল।’’ তৃণমূলেরও একটি সূত্রের দাবি, কয়েক দিন ধরেই গোষ্ঠী কোন্দলে উত্তেজনা ছিল কুসুমগ্রামে। তার জেরে বুধবারই একটি দলীয় কর্মসূচিও বাতিল করা হয়।

এ দিন ঘটনার পরে কুসুমগ্রামে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। কলেজের সামনে ও পরে থানায় দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বিক্ষোভ, মিছিল ও অবরোধ কর্মসূচি নেয়।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধায়ক সজল পাঁজার মৃত্যুর পরেই এই এলাকায় গোষ্ঠী-কোন্দল বেড়েছে। একাধিকবার এলাকার নেতাদের জেলা সদরে বা কলকাতায় ডেকে কলহ মেটানোর কথা বলেছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিষয়টি নিয়ে বিধায়ক সৈকতবাবুকে সতর্ক করেন। তার পরেও গোষ্ঠী-কোন্দলে লাগাম যে পড়েনি, এই ঘটনা তারই প্রমাণ বলে দাবি তৃণমূল কর্মীদের একাংশের।

ব্লক তৃণমূল সভাপতি শেখ আজিজুল হক বলেন, ‘‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন নেতাদের জানানো হয়েছে। বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না।’’ দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের বক্তব্য, ‘‘পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন