Lok Sabha Election 2024

দিলীপকে ‘গো ব্যাক’, ফিরল পুরনো স্মৃতিও

চার বছর আগে দলের রাজ্য সভাপতি থাকাকালীন একটি কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে মন্তেশ্বরের ভাগরা বাজার এলাকাতেও চা পান করতে এসে ‘গো ব্যাক’ শুনতে হয়েছিল দিলীপ ঘোষকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান ও মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৪ ০৮:২৪
Share:

তখনও ঝামেলা বাধেনি। তৃণমূল নেতার সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় দিলীপ ঘোষের। —নিজস্ব চিত্র।

প্রচারে বেরিয়ে ‘গো ব্যাক’, ‘দূর হটো’ শুনতে হল বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষকে।মঙ্গলবার বর্ধমানের ১০৮ শিব মন্দির, নীলপুর, বাদামতলা হয়ে বর্ধমানের ছ’নম্বর ওয়ার্ডে রেল আমবাগানে দোল উৎসবে যোগ দিয়ে গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন তিনি। সেখানেই দুর্গামণ্ডপে বসেছিলেন তৃণমূল নেতা শিবশঙ্কর ঘোষ-সহ কয়েক জন। তাঁদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন দিলীপ। কথার মাঝেই অনুচিত মন্তব্যের অভিযোগ তুলে তৃণমূল কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। গো ব্যাক স্লোগানও দেন।

Advertisement

চার বছর আগে দলের রাজ্য সভাপতি থাকাকালীন একটি কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে মন্তেশ্বরের ভাগরা বাজার এলাকাতেও চা পান করতে এসে ‘গো ব্যাক’ শুনতে হয়েছিল দিলীপ ঘোষকে। এ বার প্রার্থী হওয়ার পরে তিনি প্রচার শুরু করতেই সেই ঘটনাও চর্চায় উঠে এসেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন বর্ধমানে কথোপকথনের মাঝে ওই তৃণমূল নেতা দিলীপকে বলেন, “মেদিনীপুর তো আপনার সাজানো বাগান। আপনি চষে এলেন, আর একজন চাষ করবে!” জবাবে দিলীপ হাসতে হাসতে বলেন, “বর্ধমান-মেদিনীপুর তো চাষের জায়গা। আমরা চাষা, আপনারাও চাষা। আমাদের কাজই হল আশায় বাঁচা।” আচমকা এক বিজেপি কর্মী বলে ওঠেন, “দাদা চলে এসেছে, তৃণমূল কাঁপছে।” এর পরেই উত্তেজনা শুরু হয়। শিবশঙ্করের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। আওয়াজ ওঠে, ‘দিলীপ ঘোষ গো ব্যাক’, ‘দিলীপ ঘোষ দূর হটো’। খবর পেয়ে বর্ধমান থানার পুলিশ, র‍্যাফ গিয়ে দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়।

Advertisement

ওই তৃণমূল নেতা পরে বলেন, “আমরা তো সৌজন্যই দেখাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে আলপটকা মন্তব্য করেন বিজেপির কর্মীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরা ভয় কী জিনিস জানেন না। তৃণমূল কর্মীদের অভিধানেও ভয় নেই। সেই কারণেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়েছে।” আর গাড়িতে উঠে দিলীপ শুধু বলেন, “বিতর্কের সুযোগ করে দিচ্ছি।”

চার বছর আগেও সংগঠনের কাজে কলকাতা থেকে মেমারি, সাতগাছিয়া হয়ে নবদ্বীপ যাচ্ছিলেন দিলীপ। তখনই চা খেতে নামেন ওই দোকানে। কথাবার্তার মাঝেই তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। ভিড় জমে যায়। তৃণমূল কর্মীরা ‘দিলীপ ঘোষ গো ব্যাক’ ধ্বনি তোলেন। নিরাপত্তা রক্ষী ও মন্তেশ্বর থানার পুলিশকর্মীরা তাঁকে নিরাপদে এলাকা ছাড়ার ব্যবস্থা করে দেন।

এলাকার তৃণমূল নেতা তথা স্থানীয় পিপলন পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ সরিফুদ্দিন ওই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা ওখানেই ছিলাম। দিলীপবাবু ওই দোকানে চা পান করতে করতে বেশ কিছু ধর্মীয় উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলতে থাকেন। এলাকার মানুষজন সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিবাদ জানান এবং তাঁকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য গো ব্যাক ধ্বনি দেন।’’ ওই ঘটনা চার বছরে ফিকে হয়ে গেলেও এ বার দিলীপ বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে প্রার্থী হওয়ায় ফের তা ভেসে উঠেছে। মন্তেশ্বর বিধানসভা এই কেন্দ্রেই পড়ে। এ বার উস্কানিমূলক কথা বললে প্রতিবাদ হবে বলেও দাবি করেন তাঁরা।

মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহমেদ হোসেন শেখ বলেন, ‘‘মন্তেশ্বরের পরিস্থিতি গত কয়েক বছর ধরে শান্তিপূর্ণ। গত বিধানসভা ভোটেও জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যবধানে এখানে জয়লাভ করেছে তৃণমূল। তাই ভোটের প্রচারে এসে দিলীপবাবু যদি সে দিনের মতো কথা বলেন, সাধারণ মানুষ ও কর্মীরা সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে প্রতিবাদ জানাতে প্রস্তুত।’’ যদিও বর্ধমান জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ পোদ্দারের দাবি, ‘‘সেদিন দিলীপবাবু কোনও উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখেননি। পুরোটাই তৃণমূলের পরিকল্পনা মাফিক চক্রান্ত। গত বিধানসভায় ভোট লুট করে জয়ের ব্যবধান বাড়িয়েছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটেই কার কতখানি দম প্রমাণ হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন