চলেছে রথ। নিজস্ব চিত্র
এই রথে জগন্নাথ, সুভদ্রা, বলরামের বিগ্রহ থাকে না। ত্রিশূল হাতে থাকেন ধর্মগুরু সিংরাই মারান্ডি। তিনিই আশ্রমেরও মূল সেবাইত। কুলটির নিয়ামতপুরে ফি বছর সিংরাইকে রথে বসিয়ে দড়ি টানেন এলাকার পাশাপাশি বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ বিভিন্ন রাজ্যের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা।
রথযাত্রা দিন, রবিবার দেখা গেল, সকাল থেকেই রথ সাজাতে ব্যস্ত ভক্তের দল। দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ নতুন পোশাক গায়ে চাপিয়ে ভক্তেরা রথ বের করলেন নিয়ামতপুরের সিংরাই আশ্রম থেকে। সেই রথ লাগোয়া বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে ফিরে এল আশ্রমেই। শুরু হল পুজোপাট।
কত দিন চলছে এই আচার? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৪১ বছর আগে এই আশ্রমটি তৈরি হয়েছিল। আশ্রমের মূল সেবাইত সিংরাই জানান, আশ্রম প্রতিষ্ঠার বছর থেকে এ ভাবেই রথযাত্রা চলছে। তবে রথযাত্রা শুরুর আগে একটি বিশেষ আচার রয়েছে। তা-ও সিংরাইয়েরই নির্দেশ বলে ভক্তেরা জানান। রথযাত্রা শুরুর আগে আদিবাসী মহিলারা প্রথমে স্বামীর পুজো করেন।
আশ্রমের সঙ্গে যুক্ত শুকদেব মারান্ডির দাবি, ‘‘দেশের কোথাও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে রথযাত্রার উৎসব পালিত হয় না। সিংরাই মারান্ডি স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পরেই এখানে উৎসবের সূচনা হয়।’’ সিংরাই মারান্ডি জানান, প্রথম জীবনে তিনি রেলে চাকরি করতেন। সেই চাকরি ছেড়ে বার্নপুরের ইস্কো স্টিল প্ল্যান্টে যোগ দেন। সেই সময়ে এক দিন স্বপ্নাদেশ পেয়ে নিয়ামতপুরে এই আশ্রমটি প্রতিষ্টা করেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, আদিবাসী সম্প্রদায়ের বহু মানুষ সিংরাইয়ের কাছে দীক্ষাও নিয়েছেন।