নির্মাণ সামগ্রীর সরবরাহ নিয়ে সংর্ঘষ, আহত

নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের বরাত নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। শুক্রবার দুপুরে আসানসোল উত্তর থানার চাঁদমারি এলাকার ওই ঘটনায় উভয় পক্ষের তিন জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে স্থানীয় একটি ক্লাবঘরও। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, রাজ্য সরকারের একটি নির্মীয়মাণ শ্রমভবনে মাল সরবরাহ করায় আধিপত্য কায়েম করা নিয়েই এই লড়াই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৫ ০০:৪৭
Share:

বাঁ দিকে, তছনছ ক্লাবের জিনিসপত্র। ডান দিকে, আহত বাপি মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের বরাত নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। শুক্রবার দুপুরে আসানসোল উত্তর থানার চাঁদমারি এলাকার ওই ঘটনায় উভয় পক্ষের তিন জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে স্থানীয় একটি ক্লাবঘরও। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, রাজ্য সরকারের একটি নির্মীয়মাণ শ্রমভবনে মাল সরবরাহ করায় আধিপত্য কায়েম করা নিয়েই এই লড়াই।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে চাঁদমারি ও কল্যাণপুর ২ নম্বর সেক্টরের মাঝামাঝি অবস্থিত একটি ক্লাব ঘরে অতর্কিতে হামলা চালায় জনা পঁচিশের একটি দল। তখন ওখানে প্রায় জনা দশেক ক্লাবের সদস্য আড্ডা দিচ্ছিলেন। এরপরেই দু’পক্ষের ব্যপক মারামারি বেধে যায়। আহতও হন কয়েকজন। ক্লাবের জিনিসপত্র তছনছ করে ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ। পরে হামলার খবরে আশপাশের আকও কিছু লোকজন ছুটে এসে হামলাকারীরা পালায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। পুলিশের দাবি, কী কারণে মারামারি তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এলাকার তৃণমূল নেতা তথা দলের আসানসোল ব্লক সভাপতি উৎপল সিংহ বলেন, ‘‘মারামারির ঘটনায় জড়িত দু’পক্ষই বহু দিন ধরে এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের কাজ করে। তবে শুক্রবারের ঘটনার পিছনে কী কারণ আছে আমি জানি না।’’

এলাকাবাসীদের দাবি, এ দিনের সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত ওই দুই গোষ্ঠী ছাড়া আরও দুটি গোষ্ঠী এলাকায় রয়েছে, যাঁরা নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহকারী সিন্ডিকেট বলে পরিচিত। এরা মাঝেমাঝেই নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। তবে এই ধরনের মারামারির ঘটনা আগে কখনও হয়নি বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, চাঁদমারি এলাকায় রাজ্য সরকারে একটি শ্রমভবন তৈরি হচ্ছে। ভবণ নির্মানের জন্য প্রয়োজনীয় নির্মাণ সামগ্রী যেমন ইট, বালি, সিমেন্ট, লোহার রড ইত্যাদি সরবরাহ করতে চাইছে ওই চারটি গোষ্ঠীই। তা নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই গোষ্ঠীগুলি নিজেদের মধ্যে ঝামেলায় জড়িয়ে রয়েছে। পরিস্থতি যাতে আয়ত্তের বাইরে না যায় তাই কিছুদিন আগে এলাকার তৃণমূল নেতারা চারটি গোষ্ঠীকে নিয়ে আপোস করিয়ে দেন। ঠিক হয় শ্রমভবনটির জন্য যা কিছু নির্মাণ সামগ্রী লাগবে তার সবটাই ওই চারটি গোষ্ঠী সমান ভাগে ভাগ করে সরবরাহ করবে। কিন্তু একটি গোষ্ঠী তা না মানাতেই এই ঝামেলা বাধে।

Advertisement

আহত বাপি মণ্ডলও বলেন, ‘‘আমরা চাই সবাই মিলে কাজ করতে। কিন্তু ওরা তা চাইছে না। তাই মারধর করল।’’ আক্রান্ত আরও এক জন শক্তিপদ হাজরা বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূল করি। যারা হামলা চালিয়েছে তারাও তৃণমূল করে। নেতারা আমাদের বসিয়ে সমঝোতাও করে দিয়েছেন। কিন্তু ওরা তা মানতে চাইছেনা। এখন নেতারাই ঠিক করবেন কী হবে।’’

কর্মীদের প্রকাশ্যে এমন মন্তব্যে খানিকটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েছেন দলের নেতারা। তৃণমূলের আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘আমি জানি দুই পক্ষই তৃণমূলের। শ্রম ভবণের নির্মাণ সামগ্রীর সরবরাহ নিয়েই ঝামেলা বলে শুনেছি। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, সবাইকেই ভাগাভাগি করে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দলের নেতা তথা মন্ত্রী মলয় ঘটককে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি কলকাতা থেকে ফেরার পরে এই বিষয়ে বৈঠক ডেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন