ঝড়বৃষ্টিতে উড়ল চাল, ক্ষতি চাষে

প্রায় ঘন্টা তিনেকের তুমুল ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে কোথাও মাটির বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। কোথাও বা আবার খেতের ফসল, সব্জি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলা ঝড়-বৃষ্টির জেরে এমনই অবস্থা কাঁকসা, বুদবুদ, গলসি, ভাতার, আউসগ্রাম-সহ দুর্গাপুর ও বর্মানের বিভিন্ন এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বুদবুদ ও বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৫ ০১:২৪
Share:

ভাতারের রাস্তায় ঝড়ে উপড়ে়ছে গাছ। —নিজস্ব চিত্র।

প্রায় ঘন্টা তিনেকের তুমুল ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে কোথাও মাটির বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। কোথাও বা আবার খেতের ফসল, সব্জি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলা ঝড়-বৃষ্টির জেরে এমনই অবস্থা কাঁকসা, বুদবুদ, গলসি, ভাতার, আউসগ্রাম-সহ দুর্গাপুর ও বর্মানের বিভিন্ন এলাকায়।

Advertisement

গলসি ১ ব্লকের মানকর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মাড়ো গ্রামে গিয়ে দেখা গিয়েছে, প্রবল ঝড়-শিলাবৃষ্টির জেরে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গ্রামের বাসিন্দারা জানালেন, তাঁরা খেতে তিল ও ধানের চাষ করেছিলেন। গ্রামের বাসিন্দা সাধন রুইদাস, রবি রুইদাসরা জানান, শিলাবৃষ্টির জেরে বেশ কয়েকবিঘে জমির ধান ঝরে গিয়েছে। নষ্ট হয়ে গিয়েছে তিলগাছগুলিও। ক্ষতি হয়েছে পেঁয়াজ চাষেও। কোঁজ নিয়ে জানা গেল, ওই এলাকার প্রায় বিঘে ১৫ জমিতে ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে বেশ কয়েকচি বাড়ির অ্যাসবেস্টরের বাড়ির চালও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা বাসিন্দা সঞ্জয় রুইদাসও ‘‘সমস্ত তিলগাছগুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সোমবার প্রশাসনের কাছে ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে লিখিতভাবে জানাব। এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন।’’

শুধু মাড়ো গ্রামেই নয়, ঝড়, বঋষ্টির জেরে ক্ষতি হয়েছে কসবার মানা এলাকাতেও। গ্রামে ঘুরে দেখা গেল বেশকিছু গাঁদা ফুলের চারা ও সব্জি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এলাকার বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস, তিনকড়ি হালদাররা জানান, এ সময় বেশিরভাগ জমিতেই ঝিঙে, পটলের মতো সব্জির চারা বসানো হয়। তা ছাড়া এখনই ধানে শিষ আসার সময়। দুর্যোগের ফলে সবকিছুরই অল্পবিস্তর ক্ষতি হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা অনুকূল বৈদ্য নামে এক ব্যক্তির মাটির বাড়ি ঝড়ে পড়ে গিয়েছে। আরও বেশ কয়েকজনের বাড়ির খড়ের চালও উড়ে গিয়েছে।

Advertisement

ক্ষতি হয়েছে গলসি ১ নম্বর ব্লকের উচ্চগ্রামেও। সেখানেও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর। এ ছাড়াও কাঁকসার বিভিন্ন এলাকাতে বেশকিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

গলসি ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।’’

ভাতারের কাশীপুর, এরুয়ার, কামারপাড়া গ্রামেও বেশকিছু বাড়ি ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ভাতারের চাষিরা জানালেন মূলত ক্ষতি হয়েছে সব্জি, ধান ও আমের। ঝড়ের ফলে পশ্চিম ভাতারের বাণেশ্বরপুর গ্রামে বেশ কয়েকটি ইলেকট্রিক পোল উল্টে পড়ে। আউসগ্রামের ভেদিয়া, বন বগ্রাম, অমরপুর এবং বর্ধমানের হাটগোবিন্দপুর, নবস্থা প্রভৃতি এলাকাতেও ক্ষতির পরিমাণ কমবেশি একই। কামারপাড়া গ্রকামের বাসিন্দা ধনঞ্জয় দত্ত, আউসগ্রামের পার্থ হাজরারা বলেন, ‘‘ধানের সর্বনাশ হয়ে গেল। এবার আর কিছুই ঘরে তুলতে পারবো না।’’ রবিবার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলি ঘুরে দেখেন ভাতারেরে বিডিও প্রলয় মণ্ডল। প্রলয়বাবু জানান, ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে শস্য বীমার আওতায় ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের আনা যায় কি না তাও ব্লক প্রশাসন ভেবে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন