খুনের ৩৫ বছর পার, স্তব্ধ শুনানি

দুটি ঘটনায় বর্ধমান থানার। প্রথমটি ঘটে ১৯৮৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর। দ্বিতীয়টি ঘটে ১৯৮০ সালে। ঘটনা দুটির মধ্যে আপাত মিল নেই, তবে দুই ক্ষেত্রেই৩০-৩৫ বছর পরেও শুনানি শুরু হয়নি আদালতে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৭ ০২:৩৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ভান্ডারডিহি গ্রামে বাগান পাহারা দেওয়ার সময় তাঁর বাবার মুখে অ্যাসিড ঢেলে, পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ করেন বালিশা গ্রামের মহম্মদ শুকুর আলি।

Advertisement

বর্ধমান শহরের খাজা আনোয়ার বেড়ের একটি ঘড়ির দোকান থেকে টাকা ও নামী কোম্পানির ঘড়ি চুরি যায়। ওই দোকানের মালিক আবুল হোসেন নির্দিষ্ট অভিযোগ করেন।

দুটি ঘটনায় বর্ধমান থানার। প্রথমটি ঘটে ১৯৮৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর। দ্বিতীয়টি ঘটে ১৯৮০ সালে। ঘটনা দুটির মধ্যে আপাত মিল নেই, তবে দুই ক্ষেত্রেই৩০-৩৫ বছর পরেও শুনানি শুরু হয়নি আদালতে। আইনজীবীদের অভিযোগ, দুটি মামলারই কেস ডায়েরির (সিডি) খোঁজ মিলছে না। ফলে বছরের পর বছর শুনানির তারিখ পড়ছে।

Advertisement

জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, তিন দশক আগের মামলার নথি কী অবস্থায় রয়েছে, তা দেখতে হবে। অনেক সময় আদালতের রেকর্ড ঘরেও মামলার নথি পড়ে থাকে, যা বিচারক পর্যন্ত পৌঁছয় না। আবার অভিযুক্ত বা অভিযোগকারীদের মধ্যে কেউ মারা গেলেও চার্জশিটের প্রতিলিপি দেওয়া যায় না। ফল, বিচার প্রক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দেয়। ওই পুলিশ কর্তার দাবি, “খাতায়-কলমে ৪৯৬টি মামলার নথি বর্ধমান থানা থেকে আদালতে চলে গিয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। বাস্তবে ওই সব নথি থানাতেই ছিল। গত কয়েক মাসে সেই মামলা কমে তিরিশ-বত্রিশে নেমে এসেছে।”

বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর বর্ধমান থানার বালিশা গ্রামের মহম্মদ শুকুর আলি অভিযোগ করেন, তিনি ও তাঁর বাবা ভান্ডারডিহি গ্রামে বাগান পাহারা দিচ্ছিলেন। আচমকা প্রায় দুশো জন তাঁদের উপর হামলা চালায়। তাঁর বাবাকে পুকুরের জলে চোবানো হয়, তারপরে মুখে অ্যাসিড ঢেলে মারধর করা হয়। সে দিনই তাঁর বাবা মারা যান। এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ঘটনার কেস ডায়েরিও খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। খাজা আনোয়ার বেড়ের ঘড়ির দোকানে চুরির ঘটনাতেও পুলিশ চার্জশিট জমা দেয় ১৯৮২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। সেই কেস ডায়েরিও একই রকম ভাবে উধাও।

বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা বলেন, “এ ধরণের গাফিলতির ফলে বিচারপ্রার্থীরা হয়রানির শিকার হন। আদালতের সদর্থক ভূমিকা পালন করা উচিত।”

আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ১৯৯৫ সাল থেকে ওই দুটি মামলার কেস ডায়েরি আদালতে পেশ করার জন্য আদালত নির্দেশ দিচ্ছেন। গত শুক্রবারও বিচারক পরবর্তী শুনানিতে কেস ডায়েরি আদালতে জমা দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

কিন্তু তারিখের পর তারিখের রেওয়াজে বদল নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন