পসরা: কালনার আনাজ বাজারে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
দুর্গাপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই লক্ষ্মীপুজোর পালা। বাড়িতে-বাড়িতে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতি। কিন্তু সে জন্য পুজোর উপাচারের সামগ্রী থেকে ভোগের জিনিসপত্র কিনতে বাজারে বেরিয়ে ভাঁজ পড়ছে অনেকের কপালেই।
শহর থেকে গ্রামাঞ্চল, সর্বত্রই অধিকাংশ বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন হয়। আলপনা দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে ঘরে-ঘরে। দিন দুয়েক আগে থেকে শুরু হয়েছে কেনাকাটা। মঙ্গলবারই নানা বাজারে চড়তে শুরু করেছে জিনিসপত্রের দাম।
বিভিন্ন বাজারে দেখা যায়, প্রতিটি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা দরে। মোচা ১২-২০, বাঁধাকপি ৩০ টাকায় বিকোচ্ছে। টমেটো ৪০, পটল ২০, শসা ১৬-২০, বেগুন ৪০, ঢ্যাঁড়শ ২০, বরবটি ১৫, কুমড়ো ১৫, লঙ্কা ১০০, বিন ১৫০, পালংশাক ২০, ঝিঙে ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, আনাজ পচে যাওয়ার আশঙ্কায় গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই বাজার সারেন পুজোর আগের দিন। তাই আজ, বুধবার আরও বাড়তে পারে দাম। কালনা চকবাজারের আনাজ বিক্রেতা ধ্রুব দে বলেন, ‘‘দর কিছুটা বাড়লেও এ বার ভাল মানের আনাজ দেওয়া যাচ্ছে ক্রেতাদের। তবে পুজোর আগের দিন চাহিদা অনেক বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে দর আরও কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’
পুজোর আগে ফলের বাজারও বেশ চড়া। লক্ষ্মীপুজোয় নারকেলের বেশ চাহিদা থাকে। এ দিন নানা বাজারে নারকেল বিক্রি হয় ২০-২৫ টাকায়। আপেল ৮০-১০০, রাঙাআলু ৪০, শাঁখালু ৭০-৮০, আঙুর ৩০০, পানিফল ৮০-১০০, বেদানা ১০০-১২০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সিঙ্গাপুরি ৩০ টাকা কলা ডজন ও কাঁঠালি কলা ৪০ টাকা ডজন দরে বেচছেন বিক্রেতারা। লক্ষ্মীর সরা গত বার যেখানে বিক্রি হয়েছিল ২০-৩০ টাকা দরে, এ বার মঙ্গলবারই তার দাম ৫০ টাকা। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে প্রতিমার দর। মাপ অনুযায়ী ৮০ থেকে ৮০০ টাকা দামের প্রতিমা রয়েছে।
গ্রামগঞ্জের মানুষজনের দাবি, আলু, পাট বা ধানে এ বার লাভজনক দাম মেলেনি। জেলার একটি অংশে বহু মানুষ তাঁতের উপরে নির্ভরশীল। সেখানেও এ বার বিক্রিতে মন্দা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে লক্ষ্মীপুজোয় বাজার চড়তে থাকায় চিন্তিত অনেকেই। কালনার চাষি সনাতন ঘোষের কথায়, ‘‘পুজো তো বন্ধ করা যাবে না। কিন্তু পরিস্থিতি, কোনওমতেই তা সারতে হবে।’’