সাত রঙে রাঙবে সাত দিনের চাদর

সপ্তাহ দু’য়েক আগে রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনের প্রতিদিন চাদর পাল্টানোর এই নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছে সমস্ত হাসপাতালে। নির্দেশ দ্রুত বাস্তবায়িত করার কথাও বলা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ০৭:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক রঙ নয়, সাত দিনে সাত রঙের চাদর পাতা হবে রোগীদের বিছানায়।

Advertisement

এর ফলে, যেমন রোগের সংক্রমণ এড়ানো যাবে, তেমনি এজেন্সির মাধ্যমে চাদর-কাচা নিয়ে দুর্নীতিও আটকানো যাবে বলে দাবি স্বাস্থ্যকর্তাদের। তার সঙ্গে কিছুটা বৈচিত্র্যও পাবেন রোগীরা।

সপ্তাহ দু’য়েক আগে রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনের প্রতিদিন চাদর পাল্টানোর এই নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছে সমস্ত হাসপাতালে। নির্দেশ দ্রুত বাস্তবায়িত করার কথাও বলা হয়েছে। যদিও অনেক হাসপাতালের কর্তারাই নিয়মিত এত চাদর কাচার খরচ, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর অভাব থাকায় সমস্ত চাদর প্রতি দিন মিলিয়ে নেওয়া কী ভাবে হবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন।

Advertisement

এমনিতে, সরকারি হাসপাতালে বিছানায় চাদর পাওয়াই দুষ্কর। রোগীর পরিজনদের অভিজ্ঞতা, অনেক চিৎকার করে চাদর পাওয়া গেলেও তা এতটাই অপরিষ্কার থাকে যে ব্যবহার করা যায় না। বাড়ি থেকে আনা চাদরই হাসপাতালের বিছানায় পাততে হয়।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এখানে শয্যার চেয়ে অনেক বেশি রোগী থাকেন প্রতি দিন। ফলে মেডিসিন বিভাগের কোনও রোগীকেই চাদর দেওয়া হয় না। চাদর দেওয়া শুধু আইসিইউ, অস্থি এবং নতুন ভবনের শল্য বিভাগের রোগীদের। বর্তমানে হাসপাতালে সাদা ও সবুজ রঙের চাদর ব্যবহার করা হয়। নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, সোমবার গাঢ় গোলাপী. মঙ্গলবার রয়্যাল ব্লু, বুধবার হালকা বাদামি, বৃহস্পতিবার সবুজ, শুক্রবার সাদা, শনিবার আকাশি ও রবিবার হলুদ রঙের চাদর ব্যবহার করার কথা।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলজের সঙ্গে কাটোয়া ও কালনা মহকুমা হাসপাতালেও এই নির্দেশ বলবৎ হবে। তারপরে ধাপে ধাপে গ্রামীণ হাসপাতাল, ব্লক ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও ওই নির্দেশিকা চালু করা হবে। নির্দেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কোনও ভাবেই একই চাদর পরপর দু’দিন ব্যবহার করা যাবে না। দিনের দিন পাল্টে ফেলতে হবে। প্রশ্ন উঠছে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ১২০৫টি শয্যা, কাটোয়া ও কালনায় ২৫০টি শয্যার চাদর প্রতিদিন কাচার মতো পরিকাঠামো আছে তো?

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহার অবশ্য দাবি, “আমরা কোনও এজেন্সি নয়, নিজেরাই চাদর কেচে ফেলি। আমাদের নিজস্ব ওয়াশিং মেশিন রয়েছে। ওই নির্দেশিকা আসার পরে শিশু ওয়ার্ডের পাশে একটি বড় ঘরে চাদর কাচার ব্যবস্থা করা হবে। অত্যাধুনিক বড় ওয়াশিং মেশিন কেনার বরাতও দেওয়া হয়েছে।” জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, “কাটোয়া ও কালনা হাসপাতাল এজেন্সির মাধ্যমে চাদর কাচার ব্যবস্থা করবে।”

উদ্যোগের প্রশংসা করেও বিভিন্ন হাসপাতালের সুপারদের প্রশ্ন, এত চাদর প্রতি দিন কে মিলিয়ে নেবে? বছরভর কাচাকুচির টাকায় বা কে দেবে? যদিও নির্দেশ যখন এসেছে তা কার্যকর করার প্রস্তুতি নিয়েই এগোচ্ছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন