বাঁধ ঘেঁষে বসতি, সমস্যা পিকনিকে

যদিও বাসিন্দারা দখল করে বাস করায় প্রশাসনের কাছে তাঁদের ব্যাপারে কোনও পরিসংখ্যান নেই বলে আধিকারিকেরা জানান।

Advertisement

সুচন্দ্রা দে

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:৩১
Share:

অজয়ের পাড়ের কাছে গড়ে উঠেছে এই সব বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

শীত পড়লে অজয়ের চরে পিকনিক কাটোয়ার অনেক বাসিন্দার কাছেই ছিল অন্যতম বিনোদন। শুধু স্থানীয় বাসিন্দারা নন, দূরদূরান্ত থেকেও বালির চরে চড়ুইভাতি করতে আসতেন অনেকে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে সে সুযোগ প্রায় মিলছে না। কারণ, বাঁধের পাড় ঘেঁষে জায়গা দখল করে তৈরি হয়েছে বসতি। শুরু হয়েছে চাষাবাদও। তাই সেখানে পিকনিকের পাট চুকেছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছর আটেক ধরে কাটোয়া পুরসভার ৩ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে অজয়ের বাঁধের গায়ে আস্তানা গড়েছেন কিছু মানুষজন। জানা যায়, ১৯৭৮ সালের বন্যার পরে অজয়ের এই বাঁধ তৈরি হয়। বছর সতেরো আগে বন্যার পর থেকে উল্টো দিকের বাসিন্দারা চলে আসতে শুরু করেন কাটোয়ায়। প্রতি বছর বর্ষার জল বাড়লেই বেগুনকোলার দিকে অজয়ের পাড়ে ক্ষয় হতে থাকে। তাই সে দিকের অনেকে কাটোয়ার দিকে অজয়ের বাঁধের ধারে ও ঘুটকেপাড়া এলাকায় বসতি করে থাকতে শুরু করেন।

এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, বাঁধের মাটি কেটে অস্থায়ী টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরের পাশাপাশি পাকা বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম দাস, স্বপন দাসেরা বলেন, ‘‘বন্যায় বেগুনকোলার বাড়ি, জমি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখানে থাকতে বাধ্য হচ্ছি। এখনও জল, বিদ্যুৎ বা শৌচাগারের ব্যবস্থা হয়নি।’’ ৩ নম্বর ওয়ার্ডে অজয়ের পাড় ঘেঁষে বাঁধের নীচে প্রায় একশো ঘর মানুষের বাস বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। যদিও বাসিন্দারা দখল করে বাস করায় প্রশাসনের কাছে তাঁদের ব্যাপারে কোনও পরিসংখ্যান নেই বলে আধিকারিকেরা জানান।

Advertisement

কাটোয়া ছাড়াও প্রতি বছর অজয়ের চরে পিকনিক করতে আসতেন কালীগঞ্জ, শ্রীখণ্ড, দাঁইহাটের অনেকে। লেনিন সরণির বাসিন্দা সম্পর্ক মণ্ডল, সার্কাস ময়দানের শ্রাবণী চক্রবর্তীদের কথায়, ‘‘অজয়ের চরে মোটরবাইক নিয়ে চলার জায়গাও নেই এখন, পিকনিক তো দূর অস্ত। এখন তাই কাছপিঠে পিকনিকের জায়গা বলতে ভরসা চুপির পাখিরালয় বা অট্টহাস।’’ বাঁধ লাগোয়া ঘুটকিয়া পাড়ার তরুণ মণ্ডল বলেন, ‘‘আগে পিকনিক করতে ৫০-৬০টি দল আসত। এখন হাতে গোনা ৩-৪টি আসে।’’

সমস্যা আরও আছে। বসতির জেরে বাঁধে ইঁদুরের গর্ত বেড়ে যাওয়ায় ফাটল ধরছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। সেচ দফতরের কাটোয়া মহকুমা আধিকারিক সোমনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘দখল উচ্ছেদের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নির্দেশ পেলেই স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় উচ্ছেদ হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন