সেলের কুলটি কারখানা, আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাধা হুকিং

কোথাও হুকিং করে আলো জ্বলছে আবাসনে, কোথাও বা চুরির বিদ্যুতে চলছে স্থানীয় বিভিন্ন বাণিজ্যিক কেন্দ্র। আর এর খেসারত বইতে হচ্ছে সেল গ্রোথ ওয়ার্কসের কুলটি কারখানাকে। কারখানা কর্তৃপক্ষের ক্ষোভ, আর্থিক বর্ষে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে সবথেকে বড় বাধা এই চুরির বিদ্যুৎ।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৬ ০২:০০
Share:

এই আবাসনগুলিতেই হচ্ছে বিদ্যুৎ চুরি। নিজস্ব চিত্র।

কোথাও হুকিং করে আলো জ্বলছে আবাসনে, কোথাও বা চুরির বিদ্যুতে চলছে স্থানীয় বিভিন্ন বাণিজ্যিক কেন্দ্র। আর এর খেসারত বইতে হচ্ছে সেল গ্রোথ ওয়ার্কসের কুলটি কারখানাকে। কারখানা কর্তৃপক্ষের ক্ষোভ, আর্থিক বর্ষে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে সবথেকে বড় বাধা এই চুরির বিদ্যুৎ।

Advertisement

কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় কয়েক হাজার আবাসনে প্রাক্তন কর্মী ও বহিরগতরা বাস করেন। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ওই আবাসনগুলিতে কারাখানা থেকে অবৈধ ভাবে বিদ্যুত নেওয়া হচ্ছে। বাঁশ, শাল কাঠের খুঁটিতে তার জুড়ে হুকিং করা হচ্ছে। সমস্যা সবথেকে বেশি আপারকুলটি, পুনুড়ি, কেন্দুয়াবাজার, পাতিয়ানা মহল্লা, শিমুলগ্রাম, ঝনকপুড়ায়। এ ছাড়া এলাকার বিভিন্ন বাণিজ্যিক কেন্দ্র ও ছোট কারখানাতেও বিদ্যুৎ চুরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে ফি বছর প্রায় ১২ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল মেটাতে খরচ হচ্ছে বলে জানান সংস্থার আধিকারিক জিতেন্দ্র কুমার।

সেল গ্রেথ ডিভিশনের কুলটি কারখানায় বর্তমানে ছ’টি বিভাগে উৎপাদন হয়। কারখানায় ১২ জন সেল আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৫০০ জন ঠিকা শ্রমিক কাজ করেন। সেল কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি আর্থিক বর্ষে কারখানার আয় ধরা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। গত আর্থিক বর্ষে সেই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৪ কোটি টাকা। কিন্তু ৬২ কোটি টাকা আয় করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। কারখানা কর্তৃপক্ষের আশা, এ বার লক্ষ্যপূরণ হবে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে কারখানার সর্বোচ্চ আয় হয়েছে চলতি বছরের জুলাই মাসে। বর্তমানে সংস্থার উৎপাদিত সামগ্রী সেলের বিভিন্ন ইস্পাত কারখানায় সরবরাহ করা হয়। জিতেন্দ্রবাবু জানান, এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র ও কয়লা খনিগুলি থেকেও বরাত মিলেছে। চেষ্টা চলছে, বেসরকারি ইস্পাত সংস্থা থেকেও বরাত পাওয়ার। প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে প্রায় ৩ হাজার কর্মীকে স্বেচ্ছাবসর দিয়ে কুলটি কারখানাটি বন্ধ করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। ২০০৮-এ ফের চালু হয় কারখানা। তারপরে ধীরে ধীরে কারখানা ঘুরে দাঁড়ালেও তাতে বিদ্যুৎ চুরিই প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে জানান কারখানা কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

তবে ইতিমধ্যেই স্থানীয়দের একাংশের বাধা সত্ত্বেও বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ কাটা শুরু হয়েছে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান। জিতেন্দ্রবাবু জানান, কারখানার উৎপাদনের জন্য সেল ও এনটিপিসি-র যৌথ উদ্যোগে ২৫ মেগাওয়াটের একটি সৌর বিদ্যুত প্রকল্প তৈরির প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর ফলে বাইরে থেকে বিদ্যুৎ কিনতে হবে না। আবাসনের বৈধ বাসিন্দাদের জন্য রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের থেকে সংযোগ নেওয়া হবে বলে জানান কারখানার কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন