থমকে রয়েছে ট্রাক। —নিজস্ব চিত্র।
তোলাবাজির অভিযোগে ও নিরাপত্তার দাবিতে সোমবার সকাল থেকে যান চলাচল বন্ধ করে দিলেন পরিবহণ মালিকেরা। সোমবার সকালে রানিগঞ্জের মঙ্গলপুর শিল্পতালুকের ঘটনা। পরিবহণ মালিকদের অভিযোগ, ফি দিনই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নাম করে এলাকার একদল ব্যক্তি তোলা তুলছে।
পরিবহণ মালিকেরা জানান, বেঙ্গল সৃষ্টি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট লজিস্টিক হাবে রং, সিমেন্ট, হার্ডওয়্যার-সহ বিভিন্ন জিনিস গুদামজাত করা হয়। তারপরে চাহিদা মতো তা বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়। ওই হাবের ট্রাক-টামিনার্সে প্রতিদিন গড়ে শ’পাঁচেক ছোট-বড় লরি আসা-যাওয়া করে। সিমেন্ট ব্যবসায়ী রাজু মিশ্রের দাবি, দিন পনেরো আগে ছোট ও বড় লরি পিছু যথাক্রমে ৫০ ও একশো টাকা করে চাঁদা নিতে শুরু করে এলাকারই একদল ব্যক্তি। পরিবহণ মালিকেরা জানান, ওই চাঁদা দিতে তাঁরা কেউ আপত্তি জানাননি।
গোলমালের সূত্রপাত শনিবার থেকে। ওই দিন মঙ্গলপুর শিল্পাঞ্চল ওয়েলফেয়ার কমিটির নাম করে চাঁদা চাওয়া হয়। এ বার বেঁকে বসেন পরিবহণ কর্মীরা। এক পরিবহণ মালিক জানান, ‘কেন চাঁদা?’ জিজ্ঞেস করা হলে ওই তোলবাজরা জানিয়ে দেয়, ‘এ বার থেকে প্রতিদিনই চাঁদা দিতে হবে।’ এরপরেই প্রতিবাদ করেন পরিবহণ মালিকেরা। রবিবার রাতে রানিগঞ্জ থানায় তোলাবাজি বন্ধের দাবিতে লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়। অভিযোগ পেয়ে তিন জনকে আটকও করে পুলিশ। পরে তাদের থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপরেই সোমবার সকাল থেকে নিরাপত্তার দাবিতে পরিবহণ মালিকেরা অনির্দিষ্টকালের জন্য যান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
এই ঘটনার সঙ্গে নাম জড়িয়েছে শাসক দলেরও। পরিবহণ মালিকদের একাংশের অভিযোগ, তোলাবাজিতে মদত রয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা লালু খান ও কয়েক জনের। যদিও ওই নেতার দাবি, ‘‘বিধানসভা ভোটের পরে আমি দলের আর কোনও কাজের দায়িত্ব পাইনি। আমার নির্দেশ কে মানবে? কেন আমার নামে অপ্রপচার চালছে, তা প্রশাসনের খতিয়ে দেখা উচিত।’’ রানিগঞ্জের তৃণমূল নেতা সোহরাব আলিরও দাবি, ‘‘হাস্যকর কথা। প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।’’
তোলাবাজির অভিযোগে সরব হয়েছেন লজিস্টিক হাব কর্তৃপক্ষও। ওই হাবের তরফে নির্মল রায় বলেন, ‘‘এমন চলতে থাকলে অনেক ব্যবসায়ীই এখানে আর সামগ্রী রাখবেন না। এতে প্রচুর ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে।’’ বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্তও। তাঁর কথায়, ‘‘শাসক দলের স্পষ্ট মদতের কারণেই কয়েক জনকে ধরে আবার ছেড়েও দিয়েছে পুলিশ।’’