শিশুচুরি থেকে নির্মল বাংলা, পুজোর থিমে সচেতনতায় জোর

নোটের চোটে একটুআধটু বাজেট ছাঁটতে হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সরস্বতী পুজোর জাঁকজমক কমেনি কালনায়। এমনিতেই দু’দিনের পুজো এখানে তিন-চার দিন। তার মধ্যে নিত্যনতুন থিম, মূর্তির বাহারে কালনার সরস্বতী যেন ‘অকাল শারদীয়া’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৫২
Share:

কালনার দুটি মণ্ডপে শেষ মুহূর্তের তোড়জোড়। তোলা নিজস্ব চিত্র।

নোটের চোটে একটুআধটু বাজেট ছাঁটতে হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সরস্বতী পুজোর জাঁকজমক কমেনি কালনায়। এমনিতেই দু’দিনের পুজো এখানে তিন-চার দিন। তার মধ্যে নিত্যনতুন থিম, মূর্তির বাহারে কালনার সরস্বতী যেন ‘অকাল শারদীয়া’।

Advertisement

দু’দিন আগে থেকেই বেশ কিছু ক্লাবের পুজোর উদ্বোধন শুরু হয়েছে। কালনার চারপাশের শহর, গ্রাম মিলিয়ে প্রায় পাঁচশো পুজো হচ্ছে এ বার। পুলিশ-প্রশাসনের তরফেও নানা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, বুধবার বেলা ১২টার পর শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ‘নো এন্ট্রি’ থাকবে। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে ক্লাবগুলিকে আস্তে মাইক বাজানো, রাত দশটার পরে মাইক বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে। যে কোনও সমস্যায় সাহায্যের জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুমও। ফেরিঘাটে আপাতত বার্জে ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে, যাতে যাত্রীরা বার্জে যাতায়াত করতে পারেন। মদ্যপান করে গাড়ি চালানো কিংবা মোটরবাইকে দু’জনের বেশি দেখা গেলেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশের দাবি। রবিবারের মধ্যে সমস্ত শোভাযাত্রা শেষ করার কথাও বলেছে প্রশাসন।

ক্লাব কর্তাদের দাবি, পুজোর খরচের একটা বড় অংশ আসে ব্যবসায়ীদের চাঁদা থেকে। এ বার নগদের অভাব তাঁরা অনেকেই পিছু হটেছেন। তবে তার মধ্যেও মাস তিনেক ধরে পুজোর প্রস্তুতি নিয়েছে ক্লাবগুলি। জাপট এলাকার একটি ক্লাব এ বার ৫০ বছরে পড়ল। তাদের থিম, ‘শ্রীকৃষ্ণের বিশ্বরূপদর্শন’। উদ্যোক্তাদের অন্যতম বিভাস দত্ত জানান, ছৌ নাচের আয়োজন করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু টাকার জন্য পিছিয়ে আসতে হয়েছে। রামেশ্বরপুর এলাকায় একটি ক্লাবের থিম আবার ‘নোট বন্দি সরস্বতী’। নোট বাতিলে ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষের কী অসুবিধে হয়েছে, তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপে। সঙ্গে সোনার কেল্লার আদলে সাজানো হয়েছে মণ্ডপ। পুজো কমিটির তরফে সুখেন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নিজেদের সমস্যার কথা প্রতিমার মধ্যে ফুটিয়ে তুলেছি।’’ শহরের আর একটি ক্লাব আবার প্রতিবারের মতো জোর দিয়েছে আলোয়। ক্লাবের এক কর্তা দীপককুমার ঘোষ জানান, ব্যবসায় মন্দা চলায় বাজেট কিছুটা কমাতে হয়েছে। কালনা শহরের তালবন এলাকার একটি ক্লাবের থিম আবার নার্সিংহোম চুরি। বিভিন্ন মডেলের মাধ্যমে দর্শকদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে এই দৃশ্য। শহরের শ্যামরায় পাড়ার একটি পুজোর থিম মৌ বন। সেখানে মৌমাছিরা কীভাবে খেলে বেড়ায় তা তুলে ধরা হয়েছে। আদালতের গা ঘেঁষা ক্লাবটি আবার মণ্ডপে ফুটিয়ে তুলেছে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের দৃশ্য। সাম্প্রতিক ঘটনার কথা মাথায় রেখে গুজব না ছড়ানোরও আবেদন জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। বড়মিত্র পাড়ার পুজোয় আবার ফুটে উঠেছে বরফ ঢাকা কাশ্মীর। এ ছাড়াও মিশন নির্মল বাংলার মতো সামাজিক বিষয়ও ঠাঁই পেয়েছে মণ্ডপভাবনায়।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন