সেজে উঠেছে আসানসোল-শিয়ালদহ ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস। নিজস্ব চিত্র
প্ল্যাটফর্মে ট্রেনটি দেখে চমকে গিয়েছিলেন যাত্রীরা। শিয়ালদহগামী ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ধরতে গিয়ে সোমবার আসানসোলের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যে ট্রেন তাঁরা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন, সেটি রীতিমতো ঝাঁ চকচকে। কামরার ভিতরে রেল শহরের পুরনো স্থাপত্য ও শিল্পাঞ্চলের নানা দ্রষ্টব্য স্থানের ছবি। পরিপাটি বসার আসন। তকতকে শৌচাগার দেখে ধন্দে পড়েন তাঁরা। রেল কর্তৃপক্ষের ঘোষণায় নিশ্চিত হন, এটিই তাঁদের ট্রেন।
ট্রেনের এমন সৌন্দর্যায়নের ব্যবস্থা করেছেন আসানসোল ডিভিশন কর্তৃপক্ষ। ডিআরএম পঙ্কজকুমার মিশ্র জানান, যাত্রাপথে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখাই তাঁদের উদ্দেশ্য। সে জন্য আসানসোল থেকে যে সব দূরপাল্লার ট্রেন এবং ইএমইউ ট্রেন ছাড়ে, সেগুলিতে নানা ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা। রেল বোর্ডের পাশাপাশি এই কাজের খানিক দায়িত্ব তাঁরা নিজেরাও নিয়েছেন।
ডিআরএম আরও জানান, এর পরে আসানসোল-চেন্নাই এক্সপ্রেসের সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু করা হয়েছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, চেন্নাই এক্সপ্রেসে অনেক রোগী যাতায়াত করেন। ট্রেনে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে সম্প্রতি অভিযোগও উঠেছে। বেশি সমস্যা হচ্ছে প্রবীণদের। ডিআরএম বলেন, ‘‘এই ট্রেনটিতে রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে। মাসখানেকের মধ্যে ট্রেনটির খোলনলচে পাল্টে ফেলা হবে।’’
ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরে একে-একে আসানসোল থেকে রওনা হওয়া সমস্ত দূরপাল্লার ট্রেনের ভোলবদল করা হবে। ২৫টি ইএমইউ ট্রেনেরও আপাদমস্তক সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ডিআরএম জানান, কয়েকজন বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়ে একটি দল তৈরি করা হয়েছে। তারাই কামরা সংস্কারের কাজ করছেন। প্রতি মাসে পাঁচটি করে ইএমইউ-এর রেক সংস্কারের ভাবনা রয়েছে। এই কাজের দায়িত্বে থাকা কর্মী-আধিকারিকদের উৎসাহ দিতে আর্থিক পুরস্কারও দেওয়া হচ্ছে। ইন্টারসিটি ট্রেনটির সংস্কারের দায়িত্বে থাকা কর্মী-আধিকারিকদের ১৫ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বলে ডিআরএম জানান।
সেই সঙ্গে ডিআরএম এ দিন আশা প্রকাশ করেন, যাত্রীরাও রেলযাত্রার সময়ে যত্নবান হবেন। তা না হলে সমস্ত আয়োজন পণ্ড হবে। আসানসোল ডিভিশনের এই উদ্যোগে খুশি যাত্রীরাও। সোমবার ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের সংরক্ষিত কামরার যাত্রী মহুয়া বরাট বলেন, ‘‘রেল ব্যবস্থা করেছে ঠিকই। তবে তা রক্ষার দায়িত্ব আমাদের মতো যাত্রীদেরই।’’