বর্ধমান সেচখালে উদ্ধারকাজ। ইনসেটে, মৃত বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
বর্ধমান সেচখালে তলিয়ে মৃত্যু হল সাড়ে তিন বছরের এক শিশুর। বুধবার দুর্গাপুরের কোকআভেন থানার সুকান্তপল্লির আনন্দপুরের ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সওয়া ৭টা নাগাদ নিখোঁজ হয়ে যায় বিশ্বজিৎ। তার বাবা পেশায় গাড়ি চালক বাপ্পা চক্রবর্তী জানান, সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ তাঁকে বিশ্বজিৎ ডেকে তোলে। এর পরে তিনি দাঁত মাজতে যান। ফিরে এসে দেখেন, ছেলে খেলা করছে। তিনি বলেন, ‘‘ওর মা ওকে দুধ খেয়ে নিতে বলে। কিন্তু ছেলে ব্রাশ নিয়ে বলে দাঁত মেজে দুধ খাবে। এর পরে ব্রাশ নিয়ে বেরোয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখি ও আর নেই।’’
বাড়ির পিছন দিয়ে গিয়েছে বর্ধমান সেচখাল। বাপ্পাবাবু ছেলের খোঁজে খালে ঝাঁপ দেন। কিন্তু ছেলেকে পাননি। পাড়ার লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। খবর পেয়ে এলাকায় যান দুর্গাপুর পুরসভার ৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, সকাল ৯টা নাগাদ খবর পেয়ে প্রথমে সেচ দফতরের আধিকারিককে ফোন করে রাজবাঁধে সেচখালের মুখ বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হয়। এর পরে মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলেকে ফোন করে ঘটনার কথা জানানো হয়। মহকুমাশাসক উদ্ধারকারী দল পাঠান। সেচখালে তল্লাশি শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত দুপুর ১টা নাগাদ বিশ্বজিৎকে জল থেকে তোলেন স্থানীয় এক যুবক। তাকে পাঠানো হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে ডাক্তারেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মা সুমিতাদেবী কোনও রকমে বলেন, ‘‘আমার একমাত্র সন্তান বিশ্বজিৎ। সব শেষ হয়ে গেল!’’ বিশ্বজিতের পিসি ফুলটুসি মণ্ডল বলেন, ‘‘দাদা ডেকে জানায়, বাবু (বিশ্বজিৎ) ডুবে গিয়েছে। তড়িঘড়ি চলে আসি। এমন ঘটে যাবে ভাবতে পারছি না!’’ চন্দ্রশেখরবাবু বলেন, ‘‘সেচখালে জল বাড়ছে। সকলকে সচেতন থাকতে হবে। বার বার এলাকার সকলকে বলছি। শুধু সচেতনতার অভাবেই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল।’’