Inner Conflict

সভাপতি নিয়ে ‘দ্বন্দ্বে’ পৃথক কমিটি মণ্ডলে, ক্ষোভের আঁচ বিজেপিতে

উপ-দল’ তৈরির চেষ্টা ভাল চোখে দেখা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরেই দেখা দিয়েছিল ক্ষোভ-বিক্ষোভ। তাতে জেলা নেতৃত্বের কাছে বিশেষ সাড়া না মেলায় দলের নানা গোষ্ঠী বিভিন্ন মণ্ডলে ‘সমান্তরাল কমিটি’ গঠনে সক্রিয় হয়েছে—বিজেপির বর্ধমান সদর জেলার অধীনস্থ নানা মণ্ডলে এমন ঘটনা ঘটছে বলে দলীয় সূত্রের দাবি। ‘উপ-দল’ তৈরির চেষ্টা ভাল চোখে দেখা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।

Advertisement

জেলা বিজেপির বিক্ষুব্ধ অংশের দাবি, জেলায় একের পরে এক মণ্ডল সভাপতি পরিবর্তন করা হয়েছে। যোগ্যদের বদলে ‘অযোগ্য’দের হাতে মণ্ডলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সে কারণেই নানা মণ্ডলে ‘সমান্তরাল কমিটি’ গঠনের উদ্যোগ হয়েছে। বিভিন্ন মণ্ডলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরা দলের জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর উপরেও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। যে ভাবে মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন হয়েছে, তা দলের ক্ষতি করবে দাবি করে পরিস্থিতির জন্য সন্দীপবাবুকেই দুষছেন তাঁরা। বিজেপি সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত আউশগ্রামের ৫৩ নম্বর, মেমারির ২৫ নম্বর ও খণ্ডঘোষের ৫ নম্বর মণ্ডলে ‘সমান্তরাল কমিটি’ গড়ে আলাদা সভাপতি বেছেছে দলের অন্য গোষ্ঠী।

মেমারির ওই মণ্ডলের ‘সমান্তরাল কমিটি’র সভাপতি গৌর মণ্ডল দাবি করেন, “দীর্ঘদিন ধরে দল করছি। লোকসভা ভোটের সময়ে আমিই মণ্ডল সভাপতি ছিলাম। এই মণ্ডলের নিমো ১, দলুইবাজার ১ ও ২ পঞ্চায়েত থেকে ৪,২০০ ভোটে দলকে লিড দিয়েছি। আমাকে সরিয়ে তার পুরস্কার দেওয়া হল!” তাঁর অভিযোগ, ‘‘অযোগ্য জেলা নেতৃত্বের জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন কমিটিতে ২০ জন কার্যকর্তাকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। দলের প্রতি ভালবাসা থেকে সমান্তরাল কমিটি গড়া হয়েছে।’’ তিনি দাবি করেন, ৬ জানুয়ারি পাল্লা রোড-শ্বেতপুরে এক কর্মীর বাড়িতে বৈঠক করে আলাদা কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Advertisement

আউশগ্রামের ৫৩ নম্বর মণ্ডলে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের তৈরি কমিটির সভাপতি হয়েছেন দেবব্রত মণ্ডল। তিনি দাবি করেন, ‘‘দল সরকারি ভাবে সভাপতি না করায় আমার কোনও ক্ষোভ ছিল না। কিন্তু স্থানীয় কর্মীরা ওই কমিটি মানতে নারাজ। তাঁরা পৃথক কমিটি গঠন করে আমাকে পদে বসিয়েছেন। দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’’

খণ্ডঘোষের ৫ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি শম্পা মাথুরকে এ বারও এই পদে রাখা হয়েছে। তিনি জেলা পরিষদে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন। স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের একাংশ এ বার শম্পাদেবীকে মণ্ডল সভাপতি পদ থেকে সরানোর দাবি তুলেছিলেন। তা না হওয়ায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। দলের স্থানীয় নেতা স্মৃতিকান্ত মণ্ডলের বক্তব্য, “তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে আমরা যদি এমন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ভুগি, মানুষের কাছে ভাল বার্তা যায় না।’’

দলের জেলা কমিটির অন্যতম সম্পাদক বাপ্পাদিত্য ঘোষ বলেন, ‘‘এ বিষয়ে যা বলার জেলা সভাপতি ও নির্বাচকেরা বলবেন।’’ জেলা সভাপতি সন্দীপবাবু শুধু বলেন, ‘‘সাংগঠনিক নিয়ম মেনেই মণ্ডল থেকে জেলা সভাপতি গঠন করেছে দল। কেউ উপ-দল তৈরির চেষ্টা করলে, দলীয় নেতৃত্ব নিশ্চয় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।’’ মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা বিজেপি নেতা সুনীল গুপ্তের বক্তব্য, ‘‘দলের নিয়মনীতি মেনেই মণ্ডল সভাপতি গঠন করা হয়েছে। সেখানে ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছার কোনও ব্যাপার নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন