অবৈধ অটোর দৌরাত্ম্যেই বাধছে বিপত্তি

রাস্তা ছাড়তে রাজি নয় কেউই। ফলে, পথ পাচ্ছেন না যাত্রীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৪৫
Share:

রাস্তা ছাড়তে রাজি নয় কেউই। ফলে, পথ পাচ্ছেন না যাত্রীরা।

Advertisement

বাস-মিনিবাস মালিকদের দাবি, তাঁদের চলাচলের রাস্তায় অটো বন্ধ করতে হবে। অটো চালকদের পাল্টা দাবি, শহরের রাস্তায় তাঁদের চলতে দিতে হবে। না হলে রুজিতে টান পড়ছে। দু’পক্ষের এমন বিবাদ চলছে প্রায় ১১ বছর ধরে। তার জেরে বারবার অশান্তি, অবরোধ-বিক্ষোভ ও ধর্মঘটের জেরে নাকাল হন আসানসোল মহকুমার বাসিন্দারা। দু’পক্ষকে নিয়ে নানা সময়ে বৈঠক করেছে প্রশাসন। সমস্যা মেটাতে চুক্তিও করা হয়েছে। কিন্তু, ফল বিশেষ হয়নি। উল্টে, তা যেন বেড়ে চলেছে।

আসানসোল মহকুমায় বাস চলার রাস্তায় অটো যাতায়াতে প্রথম আপত্তি তোলেন মিনিবাসের মালিকেরা। ২০০৬ সালে হাইকোর্টে একটি মামলাও করেন তাঁরা। তার প্রেক্ষিতে সে বছরই রাষ্ট্রপতি আসানসোল পুর এলাকায় অটো চলাচল নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। মিনিবাস মালিকদের অভিযোগ, এর পরেও শহরে অটোর দৌরাত্ম্য বন্ধ হয়নি। ২০১৫ সালে দুই মিনিবাস মালিক রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞপ্তি কার্যকরের দাবিতে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন। ২০১৬ সালে হাইকোর্ট আসানসোল মহকুমায় অটো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

Advertisement

মহকুমা প্রশাসন আদালতের এই রায় কার্যকরে উদ্যোগী হতেই শাসকদলের একাংশ অটো চালকদের সমর্থনে নেমে পড়েন। তাঁদের দাবি, বেকার যুবকেরা ঋণ নিয়ে অটো কিনে চালাচ্ছেন। তাঁদের রুজিতে এ ভাবে টান পড়া ঠিক নয়। সহমতের ভিত্তিতে বিকল্প রাস্তা খুঁজে সমাধানের দাবি তোলেন ওই তৃণমূল নেতারা। প্রশাসন দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করলে মিনিবাস মালিকেরা প্রস্তাব দেন, বাসের রাস্তার পরিবর্তে শহরের অন্য রাস্তায় অটো চলাচলের অনুমতি দিলে তাঁদের আপত্তি নেই। অটো চালকেরাও তাতে রাজি হন। প্রশাসন মহকুমায় ৮৭টি অটোর রুট তৈরি করে। মোট ১৮৭০টি অটোকে চলার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে পুরুলিয়া বা ঝাড়খণ্ডের রেজিস্ট্রেশন করানো অটো এই শহরে চলতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু কার্যক্ষেত্রে ওই সিদ্ধান্ত অটো চালকেরা মানছেন না বলে অভিযোগ। বাস মালিকদের দাবি, তৃণমূলের কিছু নেতার মদতে ঝাড়খণ্ড ও পুরুলিয়ার রেজিস্ট্রেশন করানো বেশ কিছু অটো নিয়ে বাস চলার রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন চালকেরা। ফলে, প্রতিদিন বাসকর্মীদের সঙ্গে অটো চালকদের বচসা, মারপিট বেধে যাচ্ছে। প্রশাসন বেআইনি অটো রুখলেই সমস্যা মিটে যাবে বলে বাসকর্মীদের দাবি।

প্রশাসনের এক কর্তার অবশ্য দাবি, পরিবহণ কর্মী সংগঠনের আয় প্রচুর। তার কর্তৃত্ব পেতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছেন শাসকদলের নেতারা। তার জেরেই সমস্যা মিটছে না। তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘এই অভিযোগ আমিও পেয়েছি। দল ব্যবস্থা নেবে। প্রশাসনকে নিয়ম মেনে কাজ করতে বলেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement