গত মরসুমে বোরো চাষে ও রবি চাষে সেচখাল থেকে ছিটেফোঁটাও জল পাননি চাষিরা। বর্ধমান ও আশপাশের জেলায় বিক্ষোভ-অবরোধও করেন চাষিরা। তার আগের দু’মরসুমেও নামমাত্র জল দিতে পেরেছিল সেচ দফতর। তবে এ বার পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল বলে দাবি করেছেন প্রশাসনের কর্তারা।
সোমবার বর্ধমানের সার্কিট হাউসে চার জেলার (বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি ও বাঁকুড়া) প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন বর্ধমান বিভাগের কমিশনার হরেকৃষ্ণ রামালু। তাতে ঠিক হয়, ২৬ ডিসেম্বর থেকে রবি চাষের জন্য এবং ২৭ জানুয়ারি থেকে বোরো চাষের জন্য সেচখাল থেকে জল পাবেন চাষিরা। কমিশনার বলেন, “দামোদরের বিভিন্ন ব্যারাজে ৩ লক্ষ ৭৪ হাজার একর ফুট জল রয়েছে। সেখান থেকেই রবি ও বোরো চাষের জন্য জল দেওয়া হবে।” ঠিক হয়েছে, বোরো চাষের জন্য ১ লক্ষ ২৪ হাজার একর জমিতে জল দেওয়া হবে (বর্ধমান ৭৯, ২০০ একর, হুগলি ২৬ হাজার একর, বাঁকুড়া ১৬ হাজার ও হুগলি ২৮০০ একর)।
গত বছর অগস্ট থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় বিভিন্ন ব্যারেজে জলের টান ছিল। ফলে বোরো চাষে জল দেওয়া যাবে না বলেই আগেই জানিয়েছিল সেচ দফতর। এ বছরও চারটি জেলা মিলিয়ে ৫০ হাজার একরের বেশি জল দেওয়া সম্ভব নয় বলে প্রশাসনের কর্তারা জানিয়ে দিয়েছেন। বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের দাবি, ‘‘আমাদের জেলায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে জল দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে।’’ বাকি তিরিশ হাজার একর জমি ছড়িয়ে রয়েছে হুগলি ও হাওড়া জেলায়। জেলাশাসক জানান, ৫০ হাজার একর রবি চাষের জন্য সেচ দফতর ৭০ হাজার একর ফুট জল ছাড়বে। তাহলে কী ফের জলের সঙ্কটে পড়বেন চাষিরা? কৃষি দফতরের কর্তারা জানান, গত বছর ওই পরিস্থিতিতেও প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার একর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল বর্ধমানে। তার আগে ১২ হাজার একর জমিতে নদীসেচ প্রকল্পের মাধ্যমে জল মিলেছিল, কিন্তু চাষ হয়েছিল ১ লক্ষ ৪৪ হাজার হেক্টর জমিতে। ফলে আশা করা যায় গত বছরের চেয়ে বেশি জমিতে বোরো চাষ করা হবে।