পাঁচশো-হাজার অচল ঘোষণা হওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্য আত্মঘাতী হয়েছিলেন কালনা ২ ব্লকের রাহতপুরের পেঁয়াজ চাষি শিবপদ মান্ডি। তাঁর পরিবারের দাবি ছিল, সমবায়ে টাকা থাকা সত্ত্বেও তুলতে না পেরে খেতমজুরদের টাকা দিতে পারছিলেন না তিনি। সেই অবসাদেই আত্মহত্যা করেন। শুক্রবার বিধানসভায় ওই চাষির ছেলে মিলন মান্ডিকে চাকরি দেওয়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বর্ধমানে এক জন চাষি মারা গিয়েছেন। তাঁর ছেলে খুব একটা পড়াশোনা জানেন না। তাঁকে পঞ্চায়েত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে চাকরি দেওয়া হবে।’’ জানা গিয়েছে, পাম্প অপারেটরের পদে চাকরি পেতে পারেন চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা জানা মিলন।
২১ নভেম্বর বাড়ির কাছাকাছি একটি গাছে ঝুলন্ত দেহ মিলেছিল ভাগচাষি শিবুবাবু। পরিবারের লোকজনেরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় একচাকা সমবায় সমিতিতে চাষের জন্য টাকা গচ্ছিত রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু পুরোনো পাঁচশো-হাজার টাকা বাতিল হয়ে যাওয়ার পর বারবার গিয়েও টাকা তুলতে পারেননি। ফলে আটকে যায় খেতমজুরদের টাকা। কয়েকজন বাড়িতে এসে তাগাদাও করে। শিবুবাবুর পরিবারের দাবি, মানসিক অবসাদ থেকে আত্মঘাতী হন তিনি। সমবায়ের যদিও দাবি ছিল, তাঁদের কাছে ব্যাঙ্ক থেকে পর্যাপ্ত টাকা না আসায় চাহিদা মেটাতে পারেননি তাঁরা। ওই এলাকার আরও পেঁয়াজ চাষির ক্ষেত্রেও একই সমস্যা হয়। ঘটনার পরে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু, কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু সহ ওই পরিবারটির কাছে যান। খবর যায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও। এরপেরই তড়িঘড়ি মৃত চাষির স্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া মাসিক পেনশনের কাগজপত্র। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নবান্নে পৌঁছয় মৃত চাষির ছেলে বছর পঁচিশের মিলন মান্ডির বায়োডাটা। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘পরিবারটির পাশে প্রথম থেকেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ চাকরি পাওয়ার খবর জেনে মিলন বলেন, ‘‘সারা বছর অতিকষ্টে সংসার চলে। বাবা মারা যাওয়ার পরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।’’