প্রতীকী চিত্র
দুই শহরেই লোকসভা ভোটে দলের ফল খারাপ হয়েছিল। দু’জায়গাতেই শহর সভাপতির পদ থেকে সরানো হল দুই নেতাকে। কালনা ও কাটোয়ায় নতুন যে সভাপতি বেছে নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব, তাঁরা আগের সভাপতির বিরোধী গোষ্ঠীর বলেই দলের অন্দরে পরিচিত। বিধানসভা ভোটের আগে এই রদবদল কী প্রভাব ফেলতে পারে, সে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। যদিও জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, দলে কোনও ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ নেই। উচ্চ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
মঙ্গলবার বর্ধমানে তৃণমূলের জেলা কমিটি এবং ব্লক শহর সভাপতিদের নাম ঘোষণা করা হয়। কাটোয়া শহর সভাপতি পদে অমর রামকে সরিয়ে শুভ্রা রায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দলের একাংশের মতে, লোকসভা ভোটে কাটোয়া শহরে দলের ভরাডুবির কারণেই অমরবাবুকে পদ থেকে সরানো হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় রাজনীতিতে শুভ্রাদেবী বরাবরই কাটোয়ার বিধায়ক তথা পুরসভার প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী বলে পরিচিত। গত কয়েকবছরে পুরসভা পরিচালনা-সহ নানা বিষয় নিয়ে অমরবাবু ও রবীন্দ্রনাথবাবুর অনুগামীদের মধ্যে বিবাদ বারবার সামনে এসেছে।
অমরবাবু বুধবার বলেন, ‘‘এক সময়ে কাটোয়ায় রবিবাবুর কংগ্রেসের সঙ্গে মানাতে না পেরেই তৃণমূলে এসেছিলাম। ২০১৫ সালে আমরা কাটোয়া পুরসভার ক্ষমতায় আসি। মাস দু’য়েকের মধ্যেই রবিবাবু তৃণমূলে যোগ দেন। এখন কাটোয়ায় রবিবাবুর তৃণমূলে সিলমোহর পড়ল।’’ পরবর্তী পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘দলে আছি।’’ তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বিদায়ী কাউন্সিলর প্রণব দত্তের দাবি, ‘‘দলের নির্দেশ মেনে চলব। কিন্তু পুরনো কর্মীরা ব্রাত্যই থেকে গেলেন।’’শুভ্রাদেবী বলেন, ‘‘সকলকে নিয়েই দলের কাজ করে সাফল্য পাব, এই বিশ্বাস আছে।’’ রবীন্দ্রনাথবাবুর বক্তব্য, ‘‘দল নিশ্চয় কিছু ভাল বুঝেছে, তাই কমিটিতে পরিবর্তন এনেছে। কাউকে তো বাদ দেওয়া হয়নি।’’
কালনায় বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুকে দলের শহর সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে পুরসভার প্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্বজিৎবাবু দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক মনোনীত হওয়ার পরে তাঁর অনুগামীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন। মঙ্গলবার দেবপ্রসাদবাবু শহর সভাপতি হতেই তাঁর ঘনিষ্ঠ কর্মীরা শুভেচ্ছা জানাতে শুরু করেন। দলের শহর যুব সভাপতি পদেও বদল আনা হয়েছে। বিধায়কের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দেবজ্যোতি কোলের জায়গায় আনা হয়েছে সৌরভ হালদারকে। তৃণমূল সূত্রের দাবি, এক সময়ে সৌরভও ছিলেন বিধায়কের কাছের লোক। তবে ইদানীং দেবপ্রসাদবাবুর ঘনিষ্ঠ হয়েছেন। লোকসভা ভোটে কালনা শহরের ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টিতেই বিজেপির থেকে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। কিছু দিন আগেই শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করেছিলেন বিশ্বজিৎবাবু। বুধবার তিনি অবশ্য গোটা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দেবপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘দল আমার প্রতি আস্থা রেখেছে। চেষ্টা করব সব রকম ভাবে দায়িত্ব পালন করার।’’