ঘটনাস্থল: এই এলাকাতেই আক্রান্ত হয়েছিলেন পাঁচ জন। নিজস্ব চিত্র
রিপোর্টের ‘সত্যতা’ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় গণপিটুনি মামলার শেষ সাক্ষী, সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির ডেপুটি ডিরেক্টর বি কে জেনাকে ফের কালনা আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল। মঙ্গলবার কালনার অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক তপনকুমার মণ্ডল জানান, ২ মার্চ তাঁকে ফের আদালতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
২০১৭-র ২০ জানুয়ারি কালনার বারুইপাড়ায় ছেলেধরা গুজবের জেরে গণপিটুনিতে প্রাণ যায় নদিয়ার হবিবপুর এলাকার দুই ব্যক্তির। গুরুতর জখম হন আরও তিন জন। ঘটনার পরে এলাকা থেকে পাওয়া ছবি, ভিডিও ফুটেজ সমেত একটি মোবাইল ফোন, সিডি-সহ বেশ কিছু জিনিসপত্র সিএফএসএল দফতরে পাঠায় পুলিশ। সম্প্রতি ওই দফতর থেকে একটি রিপোর্ট আসে আদালতে। এরপরেই দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টরকে সাক্ষ্য দিতে সমন পাঠায় আদালত।
এ দিন সাড়ে ১২টা নাগাদ সাক্ষ্যগ্রহণের শুরুতেই পুলিশ যে মোবাইল এবং সিডিটি পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিল তা খোলা হয়। ডেপুটি ডিরেক্টর জানিয়ে দেন, তিনি মোবাইল, মেমোরি কার্ড, সিডিতে যা পেয়েছেন তা থেকে একটি ডিভিডি তৈরি করেছেন। বিষয়টি তাঁর মামলা সম্পর্কিত মনে হয়েছে। তবে পুলিশের পাঠানো ৮টি কাগজের প্যাকেটে থাকা নথি এবং ছবি শনাক্তকরণের জন্য পাঠানো হয়েছে ফিজিক্স দফতরে। তবে অভিযুক্তদের আইনজীবী প্রভাত সাহা, আশিসকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অতনু মজুমদার শুরু থেকেই ৬৫ বি এভিডেন্স অ্যাক্ট তুলে দাবি করেন, ইলেক্ট্রনিক কোনও জিনিসের প্রকৃত রিপোর্ট জমা না পড়লে আদালতে তা প্রাধান্য পায় না। এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশও তুলে ধরেন তাঁরা। বারবার ওই আধিকারিকের সাক্ষ্য দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলায় এক সময় বিচারকও বিরক্ত হন। তিনি জানিয়ে দেন, তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী সাক্ষ্যগ্রহণ হবে। চাইলে তাঁর নির্দেশের বিরুদ্ধে উচ্চআ দালতে যাওয়ার রাস্তা রয়েছে। এরপরেই অভিযুক্তদের আইনজীবীরা ওই কর্তাকে জেরা করার সময় চান। বেলা দেড়টা নাগাদ সাময়িক বিরতি ঘোষণা করে ৪০ মিনিট পরে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য অভিযুক্তদের আইনজীবীদের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই জিজ্ঞাসাবাদের পরেও এক আইনজীবী আরও সময় চান। তা মঞ্জুর করে ওই কর্তার সঙ্গে কথা বলে ফের তাঁকে ২ মার্চ হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।
অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী অতনুবাবু বলেন, ‘‘সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির কাছে পুলিশ জানতে চেয়েছিল তাদের পাঠানো ভিডিয়োটি আসল কি না। কিন্তু সে ব্যাপারে ওই দফতর এখনও প্রকৃত রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি।’’ মামলার সরকারি আইনজীবী বিকাশ রায় জানান, ওই আধিকারিকের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আশা করা যায় দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি হবে।