কয়েক ঘণ্টা ঘুরেই ফেরেন পর্যটক

এলাকার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন। তাকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্রের পরিকাঠামো গড়ে তোলার দাবি কালনায় দীর্ঘদিনের। সেই দাবি কতটা মিটেছে, কী ব্যবস্থা নিচ্ছে পুরসভা-প্রশাসন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার। ভাগীরথীর পাশে ছোট শহর জুড়ে নানা ধরনের মন্দির। রয়েছে গির্জা, মসজিদও। সে সবের গায়ে কারুকাজ দেখতে আসেন দেশ-বিদেশের অনেকে।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:০০
Share:

কালনার রাজবাড়ি চত্বর দেখতে আসেন দেশি-বিদেশি বহু পর্যটক। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল।

ভাগীরথীর পাশে ছোট শহর জুড়ে নানা ধরনের মন্দির। রয়েছে গির্জা, মসজিদও। সে সবের গায়ে কারুকাজ দেখতে আসেন দেশ-বিদেশের অনেকে। কিন্তু সেই সব পর্যটকদের আনাগোনার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো এখনও তৈরি হয়নি কালনায়, এলাকার বাসিন্দাদের এমন খেদ দীর্ঘদিনের। আরও পর্যটক টানার বিষয়ে নানা আলোচনা, সিদ্ধান্ত হলেও সেগুলি কবে কার্যকর হবে, প্রশ্ন রয়েছে শহরবাসীর।

Advertisement

১০৮ শিবমন্দির, প্রতাপেশ্বর মন্দির, লালজি মন্দির, কৃষ্ণচন্দ্র মন্দির, ভবা পাগলার মন্দির, মহাপ্রভু বাড়ি, খ্রিস্টান চার্চ, দাঁতন কাঠিতলার মসজিদ, জগন্নাথ তলার জোড়া শিবমন্দির, সমাজবাড়ি-সহ অজস্র নিদর্শন রয়েছে কালনায়। প্রতাপেশ্বর-সহ কয়েকটি মন্দিরের গায়ে টেরাকোটার কাজ মুগ্ধ করে পর্যটকদের। এই অঞ্চলে মন্দির তৈরি করে ভবা পাগল লিখেছিলেন বহু গান, কবিতা। সাধক কবির লেখা পাণ্ডুলিপি এখনও রয়েছে মন্দিরে। শহর ছেড়ে কিছুটা এগোলে বৈদ্যপুর, দত্তদরিয়াটন, বাঘনাপাড়াতেও বেশ কিছু প্রাচীন নিদর্শন রয়েছে।

শহর পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রতি বছর নিয়ম করে পর্যটন উৎসব হয়। এই উৎসবের আহ্বায়ক তথা কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু তার আগে ভিন্‌ রাজ্যে মোটরবাইক মিছিল করে পর্যটকদের আহ্বান জানান। এ সব সত্ত্বেও কালনার বাসিন্দাদের আক্ষেপ, সারা বছর পর্যটকদের ঢল সে ভাবে দেখা যায় না। শুধু শীতে দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক আসেন। কিন্তু ঘণ্টা চারেক ঘুরে দেখেই তাঁরা শহর ছাড়েন। কারণ, তাঁদের থাকার মতো তেমন ব্যবস্থা নেই এ শহরে।

Advertisement

শহরবাসীর অনেকেরই দাবি, বেশির ভাগ পর্যটক এখানে রাত কাটানোর পরিকল্পনা করেন না। শহরে বেড়াতে আসা আসানসোলের বাসিন্দা ঝুমা করের কথায়, ‘‘এখানকার মন্দিরগুলি আকর্ষণীয়। কিন্তু মন্দির লাগোয়া এলাকায় কোনও ভাল হোটেল নেই। ভাল রাস্তা বা আলো নেই। ভাগীরথীতে নৌকাবিহারের মতো মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা নেই। মন্দিরগুলির চার পাশও আলোকিত নয়।’’

১০৮ শিবমন্দির, রাজবাড়ি চত্বর-সহ কিছু নিদর্শন দেখাশোনা করে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ। কিন্তু, জগন্নাথতলার জোড়া শিবমন্দির, দাঁতন কাঠিতলার পুরনো মসজিদ-সহ এলাকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনই অযত্নে নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেগুলির আশপাশে তৈরি হয়েছে ঝোপঝাড়। নদিয়ার বাসিন্দা শম্পা মণ্ডল বলেন, ‘‘যে কোনও পর্যটনকেন্দ্রে গেলে গাইডের প্রয়োজন হয়। কিন্তু, কালনার নিদর্শনগুলির কথা পর্যটকদের বুঝিয়ে বলার মতো গাইড পাওয়া যায় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement