Katwa

স্বাধীনতা সংগ্রামীকে চেনে না শহর, আক্ষেপ

কাটোয়ার কাছারিপাড়ার বাসিন্দা, গৃহশিক্ষক সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের ঠাকুরদা ছিলেন শ্যামরঞ্জনবাবু।

Advertisement

সুচন্দ্রা দে

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২০ ২৩:০৯
Share:

পুরনো ছবি হাতে স্মৃতি রোমন্থন তৃষ্ণাদেবীর। নিজস্ব চিত্র

স্বাধীনতা আন্দোলনে সারা দেশের সঙ্গে পা মিলিয়েছিলেন কাটোয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামীরাও। ১৯৩১ সালে তাঁদেরই এক জন বিপ্লবী শ্যামরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সখ্যতার খাতিরে কাটোয়ায় এসেছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। একাধিক সভা, বৈঠক করেছিলেন তিনি। দিন তিনেক ছিলেন কাটোয়ার কাশীগঞ্জপাড়ায়, ‘নেতাজি সুভাষ আশ্রমে’র দোতলায়। ২৩ জানুয়ারি এলেই সে সব কথা মনে পড়ে যায় শ্যামরঞ্জনবাবুর উত্তরসূরী তৃষ্ণাদেবীর। তাঁর আক্ষেপ, শ্যামরঞ্জনবাবুর নামে কাটোয়ায় একটি রাস্তার নামকরণ হলে তাঁকে মনে রাখতেন শহরবাসী।

Advertisement

কাটোয়ার কাছারিপাড়ার বাসিন্দা, গৃহশিক্ষক সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের ঠাকুরদা ছিলেন শ্যামরঞ্জনবাবু। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন তিনি। যোগাযোগ হয় সুভাষচন্দ্রের সঙ্গে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯২৮ সালে কলকাতায় জাতীয় কংগ্রেসের ৪৩তম অধিবেশনে কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি। পরে ‘বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স’ দলে নাম লেখান। আজীবন ‘নেতাজি’র আদর্শে অনুপ্রাণিত শ্যামরঞ্জনবাবু পরবর্তীতে ফরওয়ার্ড ব্লকেও যোগ দেন।

সুদীপ্তবাবু বলেন, ‘‘১৯৩১ সালের ৩১ ডিসেম্বর দাদুর পরামর্শেই নেতাজি কাটোয়ায় এসেছিলেন। মূলত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উদ্বুদ্ধ করতেই তাঁর আগমন।’’ তবে সুদীপ্তবাবুর মা, শ্যামরঞ্জনবাবুর পুত্রবধূ তৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, ‘‘স্বাধীনতা সংগ্রামে মানুষটার ভূমিকা মনে রাখল না কাটোয়াবাসী। এই শহরে কয়েকজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর মূর্তি তৈরি হয়েছে। ওঁরও যদি একটা মূর্তি তৈরি হত বা একটা ওঁর নামে একটা রাস্তার নাম রাখা হত, তাহলে শহরবাসী ওঁকে চিনত।’’

Advertisement

ফরওয়ার্ড ব্লকের সদস্যদের সঙ্গে শ্বশুরমশাইয়ের পুরনো ছবি দেখতে দেখতে তিনি বলে চলেন, ‘‘উনি বারবার নেতাজির সংস্পর্শে আসার গল্প করতেন। নেতাজির সঙ্গে বাবার একাধিক ছবিও বাড়িতে রয়েছে।’’ সুদীপ্তবাবুর সংযোজন, ‘‘কাটোয়ায় নেতাজির সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিলেন দাদু। আইন অমান্য আন্দোলনের সময়ে কারাবরণও করেন।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নেতাজির স্মৃতি বিজড়িত সুভাষ আশ্রমটি সংরক্ষণের অভাবে বেহাল। জরাজীর্ণ বাড়ির একতলায় একটি স্কুল চলে। রয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লকের দলীয় কার্যালয়। আশ্রম দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন ১১ জন সদস্যের একটি ট্রাস্ট। ট্রাস্টের তরফে মাধবী দাস বলেন, ‘‘ওই বাড়িটি নিয়ে কিছু আইনি জটিলতা থাকায় সংস্কার করা যায়নি। সংরক্ষণের আর্জি নিয়ে মহকুমাশাসক ও পুরপ্রধানের দ্বারস্থ হয়েছি।’’ তবে নেতাজির ব্যবহার করা কোনও জিনিস আর বাড়িটিতে নেই, জানান তিনি। দু’টি দাবিই বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন