ইরমায় বন্দি কাটোয়ার পরিবার

কাটোয়ার বিল্লেশ্বরের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী সুব্রত ও কল্পনা চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে সুদেষ্ণা গত কয়েক বছর স্বামীর সঙ্গে আমেরিকায় থাকেন।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:২৫
Share:

বাইরে দাপাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ইরমা। সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। রবিবার থেকে ফ্লোরিডায় ঘরবন্দি কাটোয়ার চট্টোপাধ্যায় পরিবার। ঘরে মজুত খাবার এবং পানীয় জলের ভাঁড়ারে টান। ঝড়ের দাপাদাপি না কমলে কিছু জোগাড় করা মুশকিল। তাই কী ভাবে পরের দিনগুলো চলবে, আপাতত সেই দুশ্চিন্তায় কপালে ভাঁজ তাঁদের।

Advertisement

কাটোয়ার বিল্লেশ্বরের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী সুব্রত ও কল্পনা চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে সুদেষ্ণা গত কয়েক বছর স্বামীর সঙ্গে আমেরিকায় থাকেন। সুদেষ্ণাদেবীর স্বামী অর্ণব সান্যালের আদি বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে। তিনি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় চাকরি করেন। দু’মাস আগে বস্টন থেকে এসেছেন ফ্লোরিডার জ্যাকসনভিলে। সুব্রতবাবুরা মাস তিনেক ধরে তাঁদের কাছে রয়েছেন।

সমুদ্রের পাশেই সুদেষ্ণাদেবীদের বহুতল। সোমবার ফোনে সুদেষ্ণা জানান, সরকারের তরফে আগে থেকেই ছিল ইরমার সতর্কতা। রবিবার প্রশাসন এলাকার বাসিন্দাদের ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলে। অনেকেই সরে যান। কিন্তু তেমন নিরাপদ ঠিকানার খোঁজ জানা না থাকায়, দুই ভারতীয় পরিবারের সঙ্গে তাঁরা বহুতল ছাড়েননি। রবিবার সকালে আছড়ে পড়ে ইরমা। সুদেষ্ণার কথায়, ‘‘এমন ঝড় বহু দিন দেখিনি! ভয়ে-আতঙ্কে রয়েছি।’’ দোকানপাট বন্ধ থাকায় আনাজ, বেবিফুড— সবেরই আকাল।

Advertisement

আরও পড়ুন: ডিএ ঘোষণায় শব্দ প্রয়োগের নিন্দায় কোর্ট

অর্ণব জানান, আরও দু’-তিন দিনের খাবার মজুত রয়েছে তাঁদের। সরকারের তরফে শরণার্থীদের খাবার এবং পানীয় জল দেওয়া শুরু হলেও, ঝড় না থামলে তা কী ভাবে সংগ্রহ করবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না। সোমবার সকাল থেকে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ইন্টারনেট পরিষেবাও। সুদেষ্ণার কথায়, ‘‘খাবার আর জলের অভাবে অনেক জায়গায় চুরি শুরু হয়েছে বলে শুনেছি। যে কোনও সময় বিদ্যুৎ চলে যেতে পারে। কী যে হবে!’’

আগামী সপ্তাহে দেশে ফেরার বিমানে টিকিট কাটা ছিল সুব্রতবাবুদের। কিন্তু ইরমার জন্য বিমান সংস্থা সে উড়ান বাতিল করেছে। আবহাওয়া দফতরের ছাড়পত্র না মেলা পর্যন্ত তারা বিমান চালাতে নারাজ। ফলে, মুষড়ে পড়েছেন সুব্রতবাবু। ফোনে বললেন, ‘‘কাটোয়ার একটা পুজোয় আমি দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। ভেবেছিলাম, মেয়ের কাছ থেকে ফিরে পুজোর কাজে মেতে উঠব। এখন সে সব দূর, ভাবছি কবে বাড়ি ফিরতে পারব!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন