Liquor party Durgapur

জলাশয়ের পাড়ে মদের আসর, সমস্যা দুর্গাপুরে

বছর দেড়েক আগে আগে এডিডিএ জলাশয়ের হাল ফেরানোর পরিকল্পনা নেয়। পাম্প নামিয়ে জলাশয়টিকে জল শূন্য করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:৫৯
Share:

ভাসছে মদের বোতল-সহ অন্য বর্জ্য। —নিজস্ব চিত্র।

আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের অম্বুজা উপনগরীর প্রাচীন জলাশয় সংস্কার করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সন্ধ্যা নামলেই সেই জলাশয়ের পাড়ে বসছে মদের আসর।

Advertisement

এলাকার প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, এক সময় জলাশয়টি জঙ্গলে ঘেরা ছিল। শীতে প্রতি বছর সেখানে পরিযায়ী পাখিরা আসে। ২০০১-এ জলাশয় সংলগ্ন প্রায় ১২২ একর জায়গা নিয়ে উপনগরী নির্মাণের কাজ শুরু হয়। জঙ্গল সাফ করে বাড়ি, বহুতল আবাসন গড়ে ওঠে। অভিযোগ, দিনের পর দিন নানা কারণে পরিযায়ী পাখিদের জন্য জলাশয়ের পরিবেশ প্রতিকূল হয়ে যায়। দিনের পর দিন জলাশয়ের পাড়ে আবর্জনা ফেলায় ক্ষতি হয় জলাশয়ের। তা ছাড়া, বর্জ্য ফেলায় জলাশয়ের আয়তনও কমতে থাকে। আগাছায় ভরে যায় জলাশয়।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শীতে ‘বার হেডেড ডাক’, ‘গারগেনি ডাক’, ‘সোভিলার ডাক’, ‘স্পট বিলড ডাক’-সহ কয়েক প্রজাতির হাঁসের আনাগোনা লেগে থাকে ওই জলাশয়ে। তবে গত কয়েক বছরে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গিয়েছে। জলাশয়ে আবর্জনা ফেলার নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে বন দফতর বোর্ড লাগিয়েছে একাধিক বার। কিন্তু তাতে খুব একটা কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

বছর দেড়েক আগে আগে এডিডিএ জলাশয়ের হাল ফেরানোর পরিকল্পনা নেয়। পাম্প নামিয়ে জলাশয়টিকে জল শূন্য করা হয়। এর পরে আগাছা সাফ করে কয়েক মাস ধরে মাটি কেটে গভীরতা ও আয়তন বাড়ানো হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু দিন ধরে সন্ধ্যায় জলাশয়ের পাড়ে বহিরাগতদের আড্ডা বসছে। সকালে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, পড়ে রয়েছে মদের বোতল। এমনকি, নেশা করার পরে মদের বোতল ফেলে দেওয়া হচ্ছে পুকুরের জলেই। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, জলে ভাসছে প্লাস্টিকের গ্লাস, উচ্ছিষ্ট খাদ্য সামগ্রী প্রভৃতিও। এর ফলে পুকুরের জল দূষিত হচ্ছে। অবিলম্বে এ সব বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার বাসিন্দারা বলেন, “এক সময়ে নানা কারণে জলাশয়টি প্রায় মজে গিয়েছিল। এখন জলাশয়টি তার পুরনো আয়তন ও গভীরতা ফিরে পেয়েছে। ঠিক ভাবে নজরদারি না হলে ধীরে ধীরে জলাশয়টি ফের সৌন্দর্য হারাবে।”

স্থানীয় সূত্রে সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭-এর ২ অগস্ট জলাশয়ের পাশে একটি বাড়ির ভিত খোঁড়ার সময় একটি পাথরের খিলান দিয়ে উপর-নীচে বাঁধানো প্রায় আড়াই ফুট লম্বা ও দু’ফুট চওড়া একটি সুড়ঙ্গ পাওয়া গিয়েছিল। পুরাতত্ত্ব বিভাগ সুড়ঙ্গটিকে ‘সংরক্ষিত’ বলে ঘোষণা করে। শীতে অনেকেই জলাশয়, পরিযায়ী পাখি ও সুড়ঙ্গ দেখতে ভিড় করেন। জলাশয়টির সংস্কার করায় সেই সব মানুষজন খুশি হয়েছেন। কিন্তু এ ভাবে দিনের পর দিন কাচ ও প্লাস্টিকের বোতল, খাদ্য সামগ্রী ফেললে পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এডিডিএ-র এক আধিকারিক বলেন, “পুলিশ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।” পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে ইতিমধ্যেই সন্ধ্যার পরে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া বহিরাগতদের সেখানে দেখা গেলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তা ছাড়া জলাশয়ের পাড়ে মদ্যপান বিরোধী স্থায়ী বোর্ড লাগানো হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন