Indian Railways

ধুলোয় ভরা লোকাল, তবুও খুশি যাত্রীরা

এ দিন সকালে আসানসোল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, প্রথম ট্রেনে তেমন ভিড় নেই। যদিও সকাল ৯টার লোকালে ভিড় ভালই ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:২২
Share:

বুধবার আসানসোল থেকে ট্রেন-যাত্রা। (ইনসেটে) কামরায় ধুলো। নিজস্ব চিত্র

অবশেষে বুধবার আসানসোল ডিভিশনে চালু হল লোকাল। সকাল ৬টা ২০-তে প্রথম ট্রেনটি বর্ধমানের উদ্দেশে যায়। লোকাল চালু হওয়ায় স্বস্তিতে নানা স্তরের মানুষজন। তবে অখুশি হকারেরা। কারণ, তাঁদের এখনও ট্রেনে চড়ার অনুমতি মেলেনি। সমস্যা কাটেনি পুরুলিয়ার যাত্রীদেরও।

Advertisement

এ দিন সকালে আসানসোল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, প্রথম ট্রেনে তেমন ভিড় নেই। যদিও সকাল ৯টার লোকালে ভিড় ভালই ছিল। তবে পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। প্রায় ন’মাস ট্রেনগুলি কারশেডেই ছিল। স্বভাবতই কামরার মেঝে ও বসার আসনে জমেছে ধুলোর পুরু আস্তরণ। যাত্রী দীপ্তমান চৌধুরী বলেন, ‘‘লোকাল চালু হওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। কিন্তু ধুলো ঝেড়ে বসতে গিয়ে পোশাকের দফারফা হয়ে গিয়েছে।’’ প্ল্যাটফর্মে পরিস্রুত পানীয় জলের স্টলগুলি বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক যাত্রী। পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুরেও। যাত্রী বিনয় দাস বলেন, ‘‘এখানে সুরক্ষা ব্যবস্থা খারাপ নয়। তবে সব ঠিকমতো সাফ করা দরকার ছিল।’’

মঙ্গলবার রেলের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল যাত্রীদের বসার আসনে স্টিকার সেঁটে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে তাঁরা কোথায় বসবেন। কিন্তু এ দিন দেখা গেল, বর্ধমান বা যশিডিগামী ট্রেনগুলির অনেক কামরায় তেমন কোনও সতর্কীকরণ স্টিকার লাগানো হয়নি। আবার কিছু কামরায় স্টিকার লাগানো হলেও অনেক যাত্রীই তা মানছেন না। মাস্ক ছাড়াই, বহু যাত্রী ভ্রমণ করছেন। দুর্গাপুরে একটি ট্রেনের চালককেও দেখা গিয়েছে মাস্ক ছাড়াই।

Advertisement

আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক গৌতম সরকারের দাবি, ‘‘এমন হওয়ার কথা নয়। কামরা সাফ করা হয়েছে। বসার আসনেও স্টিকার লাগানো হয়েছে। তবে অভিযোগ যখন উঠেছে খোঁজ নেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, এ দিন থেকে আসানসোল ডিভিশনে ৩৩টি লোকাল চালু করা হয়েছে। আগামী দিনে যাত্রী বাড়লে ট্রেনের সংখ্যাও বাড়বে।

তবে আসানসোল থেকে বর্ধমান, যশিডি, ঝাঝা, ধানবাদে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও সমস্যা মেটেনি পুরুলিয়ার যাত্রীদের। পুরুলিয়া থেকে আসানসোল হয়ে বর্ধমান শাখার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় অনেকেই কাজে যান। এ দিন আসানসোল স্টেশনে দাঁড়িয়ে রেলকর্মী দিব্যেন্দু গড়াই জানালেন, পুরুলিয়ার জয়চণ্ডীতে তাঁর বাড়ি। কর্মস্থল অণ্ডালে। এত দিন জয়চণ্ডী থেকে লোকাল ধরে আসানসোল এবং সেখান থেকে বর্ধমান লোকাল ধরে অণ্ডালে গিয়েছেন। কিন্তু এখন তাঁকে অটো-বাস করে আসানসোল, ও পরে অণ্ডালে যাওয়ার ট্রেন ধরতে হচ্ছে। দিব্যেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আমরা চাই, এ বার পুরুলিয়া শাখায় লোকাল ট্রেন চালু হোক।’’ এ বিষয়ে রেলের এক কর্তা জানান, নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এ দিকে, আসানসোল স্টেশনের দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মের হুইল ব্যবসায়ী গণেশ বার্নোয়াল বলেন, ‘‘ট্রেল চলবে শুনেই সোমবার থেকে হুইল সাফাই করে সামগ্রী সাজিয়ে বসেছি।’’ স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেনের অপেক্ষায় বসেছিলেন শগুফতা বেগম। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘অনেক দিন পরে বৈঁচিতে মায়ের সঙ্গে দেখা যাচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন