আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ডে এমন হোটেলগুলিকে নিয়েই প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র
সার বেঁধে রয়েছে ভাত-রুটির হোটেল। জ্বলছে কয়লার উনুন, গ্যাসের চুল্লি। তারই মাঝে অনবরত যাতায়াত করছে যাত্রিবাহী সরকারি, বেসরকারি বাস। অভিযোগ, এমনই পরিস্থিতি আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ডে। এর জেরে স্ট্যান্ডে বিপদ বাড়ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
আসানসোল পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে হাটনরোড লাগোয়া শহরের এই সিটি বাসস্ট্যান্ডটি তৈরি হয়েছিল। প্রায় দু’দশক আগে তৈরি ওই স্ট্যান্ডে শুরু থেকেই পরিকাঠামোগত নানা সমস্যা ও অনিয়ম রয়েছে বলে অভিযোগ। যেমন, বাসশেড নেই, অপরিচ্ছন্ন শৌচাগার, বাস ধরার প্ল্যাটফর্ম জুড়ে বসেছে গুটখার অবৈধ দোকান।
তবে জনবহুল বাসস্ট্যান্ড চত্বরে সব থেকে বিপদ বাড়িয়েছে উনুন জ্বালিয়ে রান্না করা। অথচ, বাসস্ট্যান্ডে কোনও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাই নেই। এ বিষয়ে দমকলের আসানসোল কেন্দ্রের এক আধিকারিকের আশঙ্কা, ভিড়ে ঠাসা বাসস্ট্যান্ডে আগুন লাগলে আর রক্ষা নেই। বিষয়টি নিয়ে দমকলের তরফে আসানসোল পুরসভাকে সতর্কও করা হয়েছে।
আসানসোল মিনিবাস মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ রায় জানান, ফি দিন এই স্ট্যান্ডে প্রায় ৪০০টি মিনিবাস ও ২৫০টি বাস যাতায়াত করে। প্রতি মুহূর্তে অন্তত তিন থেকে পাঁচ হাজার মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। সুদীপবাবুর কথায়, ‘‘এ অবস্থায় সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তা ও পরিষেবার বিষয়টি কোনও ভাবেই উপেক্ষা করা চলবে না।’’ ওই সংগঠনের তরফেও এ ভাবে স্ট্যান্ডে রান্না বন্ধের বিষয়ে পদক্ষেপ করার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে।
আসানসোল পুরসভা অবশ্য জানায়, সম্প্রতি স্ট্যান্ডে সদলবলে অভিযান চালান পুরসভার তরফে বাসস্ট্যান্ডের নানা বিষয় দেখার জন্য দায়িত্বে রয়েছেন কাউন্সিলর কল্যাণ দাসগুপ্ত। কল্যাণবাবুর কথায়, ‘‘যাত্রীদের নিরাপত্তায় কড়া পদক্ষেপ করেছি। কয়েক দিনের মধ্যেই ফল মিলবে।’’ কী সেই পদক্ষেপ? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, হোটেল মালিকদের অগ্নিবিধি মেনে ভাটি বা উনুন জ্বালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পুরসভা পরিদর্শন করার পরে ছাড়পত্র দিলে তবেই ভাটি জ্বালাতে পারবেন হোটেল মালিকেরা। কিন্তু সবাই এই ছাড়পত্র পাবেন না। হাতে গোনা কয়েক জনই এই অনুমতি পাবেন। জানা গিয়েছে, অভিযান চালানোর সময় বেশ কয়েক জন হোটেল মালিককে ‘ট্রেড লাইসেন্স’ ছাড়াই কারবার চালাতে দেখা গিয়েছে। তাঁদের অতি দ্রুত ‘ট্রেড লাইসেন্স’ নবীকরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।