হেলিকপ্টার নামার অনুমতি মিলল না। মোবাইল ভাষণেই বালুরঘাট ও রায়গঞ্জের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দেগেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। —ফাইল চিত্র
মহকুমার দু’প্রান্তে দুই মুখ্যমন্ত্রী সভা। এক দিকে এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ। দুই সভাকে ঘিরে রবিবার থেকেই দু’দলের সমর্থকদের মধ্যে উদ্দীপনা কালনায়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়া থেকে দুপুর ১টা নাগাদ পূর্বস্থলীর জামালপুরের সভায় আসার কথা মমতার। তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, সভার জন্য বুড়োরাজ মন্দিরের মাঠ জুড়ে ছাউনির ব্যবস্থা করা হবে। ৩০ ফুট লম্বা ও ২৪ ফুট চওড়া মঞ্চ করা হয়েছে। ছ’টি গাড়িতে রাখা থাকবে ৩০ হাজার লিটার জল। কর্মী-সমর্থকদের সাহায্য করার জন্য থাকবেন ভলান্টিয়ারেরা। নিমদহের নাকাদহ মোড়, কালীনগর-সহ নানা এলাকায় গেট করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, যানজট এড়াতে কালনা ও কাটোয়ার তিন রাস্তায় সকাল থেকে ‘নো-এন্ট্রি’ রাখা হবে। সোমবার বুড়োরাজ মন্দিরে প্রচুর ভক্তের সমাবেশ হয়। সামনের রাস্তায় ‘নো-এন্ট্রি’ থাকায় পিছনে অন্য রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হবে ভক্তদের। রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা সভাস্থল, হেলিপ্যাড দেখে যান। পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তপন চট্টোপাধ্যায়, কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়েরা ছিলেন। তপনবাবু বলেন, ‘‘মঞ্চে ১২ জনের বসার জায়গা থাকবে। আশা করছি, নির্বিঘ্নেই সভা হবে।’’
এই জেলায় প্রথম আসছেন যোগী আদিত্যনাথ। ধাত্রীগ্রাম ফুটবল মাঠে তাঁর সভার আয়োজন হচ্ছে। বিজেপি নেতারা জানান, এক লক্ষ জলের পাউচ, ৫০ হাজার প্যাকেট বিস্কুটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকা থেকে কর্মী-সমর্থকেরা যাতে আসতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোথায় হেলিকপ্টার নামবে, মঞ্চের আয়তন-সহ প্রস্তুতিপর্ব রবিবার ঘুরে দেখে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একটি দল। ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের কর্তারাও। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪০ ফুট লম্বা ও ৩২ ফুট চওড়া মঞ্চে ১৫-১৬ জন নেতা বসতে পারবেন। মঞ্চে ছাউনি থাকলেও মাঠ খোলা থাকছে। পাশে বিশ্রামকক্ষ, শৌচাগারের ব্যবস্থা রয়েছে। বিজেপি-র একটি সূত্রের দাবি, অণ্ডাল বিমানবন্দর থেকে কালনায় পৌঁছবেন যোগী। দলের অন্যতম জেলা সম্পাদক ধনঞ্জয় হালদার বলেন, ‘‘জেলার নানা প্রান্ত থেকে প্রচুর মানুষ সভায় যোগ দেবেন। নিরাপত্তা থেকে সভার সমস্ত প্রস্তুতি সারা হয়েছে।’’
এক দিনে দেশের দুই মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের এলাকায়, এমনটা আগে কখনও ঘটেছে কি না, মনে করতে পারছেন না কালনার প্রবীণ মানুষজনও। এ বারের ভোট-মরসুমে আজ, সোমবারই জেলায় প্রচারে নামছেন ‘হেভিওয়েট’ নেতানেত্রীরা। তাঁরা কী বার্তা দেন, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন তৃণমূল এবং বিজেপি, দু’দলের সমর্থকেরা।