মিছিলের সামনে বিজেপি কর্মী জয়দেব বাগদি। নিজস্ব চিত্র
পরনে গেরুয়া পাঞ্জাবি। মাথায় গেরুয়া টুপি। গলায় বিজেপির প্রতীক দেওয়া উত্তরীয়। কিন্তু পা খালি। শুধু প্রচার নয়, বাজারহাট থেকে অফিস-কাছারি— সর্বত্রই খালি পায়ে যাতায়াত পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদের দেবশালার বিজেপি কর্মী জয়দেব বাগদির। দু’চার দিন, এমনটা চালিয়ে আসছেন প্রায় তিন দশক ধরে। কী কারণ? বছর সাতচল্লিশের জয়দেবাবুর জবাব, ‘‘প্রতিজ্ঞা করেছি, রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে তবেই জুতো বা চটি পায়ে গলাব। তার আগে নয়।’’
এমন পণ কেন? পেশায় দিনমজুর জয়দেববাবু অভিযোগ করেন, বিজেপি করার জন্য বছর তিরিশ আগে সিপিএমের লোকজন তাঁর হাত, পা ভেঙে দিয়েছিল। সমাজে একঘরে করা, রুজিতে টান, হুমকি— কিছুই বাদ যায়নি বলে অভিযোগ তাঁর। তাঁর দাবি, ‘‘তখন আমার বয়স সবে আঠারো পেরিয়েছে। তবু রেয়াত করেনি সিপিএম। এরই প্রতিবাদে তখন এমন পণ করেছিলাম।’’
জয়দেববাবুর দাবি, সিপিএমের ‘অত্যাচারে’ ১৯৯৮ সালে দুই ছেলে ও স্ত্রী’কে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে হায়দরাবাদে চলে যেতে হয়েছিল। ২০১০-এ গ্রামে ফেরেন। কিন্তু রাজ্যে ক্ষমতার হাতবদলের পরে আবার তৃণমূলের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। হামলা, সরকারি প্রকল্প থেকে তাঁর পরিবারকে বঞ্চিত করার মতো ঘটনা এই আমলেও ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি। জয়দেববাবুর ছোট ছেলে সৌরভ বলেন, ‘‘বাবা যে ভাবে রাজনীতি করছেন, তাতে গর্ব হয়।’’ একই বক্তব্য তাঁর পড়শি আনন্দ বাগদির।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এলাকার সিপিএম নেতা কার্তিক কোনারের যদিও দাবি, ‘‘জয়দেববাবুর অভিযোগ ঠিক নয়। উনি গ্রাম ছেড়েছিলেন কি না, তা-ও জানা নেই।’’ তৃণমূল পরিচালিত দেবশালা পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সীরও বক্তব্য, ‘‘অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। জয়দেববাবুর উপরে কোনও দিন অত্যাচার করা হয়নি।’’
শনিবার দলের এই কর্মীর সঙ্গে দেখা করেন বোলপুরের বিজেপি প্রার্থী রামপ্রসাদ দাস। তাঁর কথায়, ‘‘এখনও দলের অত্যন্ত সক্রিয় কর্মী জয়দেববাবু। তিনি যে ভাবে দলের পাশে আছেন, ভবিষ্যতে দলও সে ভাবেই তাঁর পাশে থাকবে।’’