প্রতীকী ছবি।
এলাকায় ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে সপ্তাহ দুয়েক আগে। কিন্তু রবিবার আসানসোল স্টেশনে টাকার ব্যাগ-সহ দু’জনের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনার পরেই ফের তৃণমূল-বিজেপি চাপান-উতোর তৈরি হল আসানসোলে।
আসানসোল স্টেশন থেকে রবিবার সন্ধ্যায় প্রায় এক কোটি টাকা-সহ দু’জনকে ধরে রেলপুলিশ। রেলপুলিশ সূত্রের দাবি, ধৃত গৌতম চট্টোপাধ্যায় ও লক্ষ্মীকান্ত সাউ নিজেদের বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। গোড়ায় তাঁরা ব্যবসার প্রয়োজনের কথা দাবি করলেও পরে দলের কাজের জন্য টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জেরায় জানিয়েছেন, দাবি রেলপুলিশের।
এই ঘটনার পরেই আসানসোলের সরব হয় তৃণমূল। দলের নেতা তথা আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির অভিযোগ, ‘‘আমরা অনেক আগে থেকেই সন্দেহ করছিলাম, বেআইনি ভাবে টাকা আনছে বিজেপি। শেষ দফা ভোটের আগে তা ধরা পড়ে গেল। আসানসোলে বিজেপির খরচের যে বহর দেখেছি তাতে এখানকার ভোটেও এরকম কিছু ঘটে থাকলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত গৌতম দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক। বিজেপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের দাবি, ‘‘দিলীপদা ওঁকে দেড় বছর আগে কাজ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। এখন তিনি কোথায় কী নিয়ে যাচ্ছিলেন, তার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। হারবে বুঝে তৃণমূল এ সব অজুহাত খাড়া করছে।’’
ভোটের আগে থেকেই আয়কর বিভাগ হিসাব বহির্ভূত টাকা আদানপ্রদান ধরতে অভিযান চালাচ্ছিল। ২৭ এপ্রিল আসানসোলে আয়কর দফতরের তরফে একটি বৈঠক করে জানানো হয়, তখনও পর্যন্ত রাজ্যে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল। তবে আসানসোলে তেমন কিছু তখনও মেলেনি বলে জানিয়েছিলেন আয়কর বিভাগের আধিকারিকেরা। রেলপুলিশ জানায়, রবিবার সন্ধ্যায় আসানসোল স্টেশনের ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ওই দু’জনকে একটি নীল ব্যাগ নিয়ে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করা হয়। ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে দু’হাজার ও পাঁচশো টাকার নোটের বেশ কিছু বান্ডিল দেখা যায়। এর পরেই খবর দেওয়া হয় আয়কর দফতরকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান আরপিএফর ওয়েস্ট পোস্টের আধিকারিকেরা। রেলপুলিশ সিদ্ধান্ত নেয়, উদ্ধার হওয়া টাকা গোনার সময়ে ভিডিয়োগ্রাফি করা হবে। টাকা গোনার যন্ত্রও আনা হয়।
রেলপুলিশের দাবি, জেরায় গৌতম তাদের কাছে বিশেষ মুখ না খুললেও দিল্লির বাসিন্দা লক্ষ্মীকান্ত নিজেকে বিজেপি কর্মী হিসেবেই পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু দিল্লি থেকে কোন ট্রেনে তাঁরা এলেন, আসানসোলে কেন নামলেন, কারও হাতে টাকা হস্তান্তরের পরিকল্পনা ছিল কি না— এ সব প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি বলে দাবি রেলপুলিশের। ধৃতদের সোমবার আসানসোলের এসিজেএম আদালতে তোলা হলে চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। হাওড়া ডিভিশনের রেলপুলিশের সুপার নীলাদ্রি চক্রবর্তী জানান, বিশদ তথ্য পেতে ধৃতদের জেরা করা হবে।