মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেছিলেন, ‘হোলি খেলুন হৃদয় দিয়ে।’ তার পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হোলি উৎসবে যোগ দিতে দেখা গেল আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেনকে। আসানসোল, দুর্গাপুরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের মতে, তৃণমূলের পাশাপাশি, হোলি বা দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে জনসংযোগের রাজনীতিতে কার্যত পিছিয়ে নেই কোনও পক্ষই।
মঙ্গলবার রাতে কুলটির নিয়ামতপুরে একটি বণিক সংগঠন আয়োজিত ‘হোলি মিলন উৎসবে’ প্রধান অতিথি ছিলেন মুনমুন সেন। ওই দিন রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ অনুষ্ঠান মঞ্চে আসেন মুনমুন। ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন, আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি, মেয়র পারিষদ মীর হাসিম প্রমুখ। তবে ওই সংগঠনটি সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল প্রার্থী অনুষ্ঠানে আসবেন জানিয়েছিলেন। কিন্তু, সেই সঙ্গে এ-ও জানান, রং মাখবেন না। তবে এক ঝাঁক খুদের দল তাঁর কপালে আবিরের টিপ পরিয়ে দেয়। পাশাপাশি, চলে শুভেচ্ছা বিনিময়, জিলিপি খাওয়াও। বণিক সংগঠনের কর্ণধার সচিন ভালোটিয়া বলেন, ‘‘আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে মুনমুন সেন এসেছিলেন, এটা খুবই ভাল লেগেছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরেও বসন্ত উৎসবের আয়োজনকে কেন্দ্র করে তৎপরতা দেখা গিয়েছে তৃণমূলে। দুর্গাপুর পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁইকে অন্য বার বসন্ত উৎসব আয়োজনে মুখ্য ভূমিকা নিতে দেখা যায় না বলেই এলাকাবাসীর একাংশের দাবি। এ বার অবশ্য তাঁকে উৎসবের আয়োজন করতে দেখা গিয়েছে কয়েক দিন আগে থেকেই। তৃণমূল নেতৃত্ব জানান, আজ, বৃহস্পতিবার ওয়ার্ড জুড়ে পদযাত্রার পরে বি-২ বাজার মোড়ে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বুধবার বিকেলে গিয়ে দেখা গেল, মঞ্চ বাঁধার কাজ চলছে পুরোদমে। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ মমতাজ সংঘমিতার। এ ছাড়াও থাকবেন মেয়র দিলীপ অগস্তি ও বিভিন্ন মেয়র পারিষদ। তবে এ সব আয়োজনের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলেই দাবি দেবব্রতবাবুর।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আজ, বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোলের শতাব্দী শিশু উদ্যানে উৎসবের আয়োজন করেছেন বলে জানিয়েছেন বিদায়ী সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ও। তাঁরও দাবি, ‘‘অনুষ্ঠানটি সম্পূর্ণ একটি অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান। শুধুমাত্র গান, আনন্দ হবে।’’ দুর্গাপুরেও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিজেপি কর্মীরা যাবেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করবেন, আবির মাখাবেন বলে জানিয়েছেন দলের নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরী জানান, বিশেষ কোনও অনুষ্ঠান তাঁরা করছেন না। যদিও শ্রমিক নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন গণ সংগঠনের নেতৃত্বকে পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য বলা হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার দাবি করেন, ‘‘সামাজিক উৎসবগুলিকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা দেখি না। নির্বাচন থাকুক বা না থাকুক, বসন্ত উৎসবে ব্যক্তিগত ভাবে গিয়ে থাকি। এ বারেও তার কোনও ব্যতিক্রম হবে না।’’