লুঠ করে বাড়ি দখলের নালিশ

এক মাসের জন্য আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। ফিরে দেখেন, সব জিনিস লুঠ হয়ে গিয়েছে। দখলও হয়ে গিয়েছে বাড়ি। মাসখানেকেরও বেশি সময় ধরে বাড়ি ফেরত চেয়ে হন্যে হয়ে ঘুরেও ফল হচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৭ ০১:১৩
Share:

প্রশাসনের দ্বারস্থ। নিজস্ব চিত্র

এক মাসের জন্য আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। ফিরে দেখেন, সব জিনিস লুঠ হয়ে গিয়েছে। দখলও হয়ে গিয়েছে বাড়ি। মাসখানেকেরও বেশি সময় ধরে বাড়ি ফেরত চেয়ে হন্যে হয়ে ঘুরেও ফল হচ্ছে না। উল্টে, হুমকি শুনতে হচ্ছে— মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ করলেন দুর্গাপুরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ডাঙাপাড়ার বাসিন্দা বিক্রম দত্ত।

Advertisement

পেশায় মার্বেল মিস্ত্রি বিক্রমবাবু জানান, ডাঙাপাড়ার বাড়িতে গত ২২ বছর ধরে তাঁরা বাস করছেন। এই ঠিকানায় ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, বিদ্যুতের বিল, গ্যাসের সংযোগ, ব্যাঙ্কের পাশবই— সবই রয়েছে। এক আত্মীয় মারা যাওয়ায় বাড়ি তালাবন্ধ রেখে ২ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী এবং বারো ও আট বছরের দুই ছেলেকে নিয়ে নৈহাটি যান। সমস্ত কাজকর্ম সেরে ১০ মার্চ তাঁরা দুর্গাপুরে ফেরেন। ফিরে দেখেন, বাড়ির তালা ভেঙে অন্য একটি তালা লাগানো রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘প্রতিবেশীদের কাছে জানতে পারি, স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের নির্দেশে কয়েক জন তৃণমূল কর্মী গয়না, টাকা, মোটরবাইক, টিভি-সহ সব জিনিস লুঠ করে ঘরে তালা দিয়ে গিয়েছে। তাদেরই এক জন অরূপ রায়ের কাছে গেলে আমাকে খুনের হুমকি দেয়।’’

বিক্রমবাবু জানান, সেই রাত দুর্গাপুর স্টেশনে কাটিয়ে পর দিন স্ত্রী ও দুই ছেলেকে মানকরে আত্মীয় বাড়িতে রেখে আসেন। তার পরে দুর্গাপুরে ফিরে ওই তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে ফের দেখা করেন। তাঁর অভিযোগ, আবার খুনের হুমকি দেওয়া হয়। ৯ এপ্রিল এনটিপিএস থানায় গেলে পুলিশ লিখিত অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে বলেও তাঁর দাবি। বিক্রমবাবুর অভিযোগ, ‘‘এক পুলিশ অফিসার জানান, অভিযোগ করার দরকার নেই। তিনি বলে দিচ্ছেন, তাতেই কাজ হবে। কিন্তু কাকে কী বলবেন, প্রশ্ন করে উত্তর পাইনি।’’ পুলিশ যদিও এই অভিযোগ মানতে চায়নি।

Advertisement

বুধবার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে এসে মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ করেন বিক্রমবাবু। তিনি বলেন, ‘‘জুলুম করে আমাদের বেঘর করা হয়েছে। গায়ের জোরে ওই তৃণমূল কর্মীরা এলাকার বেশ কিছু সরকারি জমি ও দখল করা বাড়ি বিক্রি করেছে।’’ মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী অরূপবাবুর যদিও দাবি, ‘‘আমাদের কাছ থেকে নানা ভাবে অনেক টাকা আত্মসাৎ করেছেন উনি। টাকা না মেটালে বাড়ি ফেরত দেব না।’’ এলাকার কাউন্সিলর দীপঙ্কর লাহার বক্তব্য, ‘‘আমি বিষয়টি আজই জানলাম। এটা একেবারে ধারদেনা সংক্রান্ত ব্যাপার। এর মধ্যে রাজনীতি নেই।’’ তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘দলের নাম করে কেউ কোনও বেনিয়ম করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন