কুকুরকে খাওয়াচ্ছেন সৌম্য ও তাঁর স্ত্রী শুভ্রা। নিজস্ব চিত্র
জন্মদিনে মাংসভাতের ভোজ। বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়-পরিজন নয়, বর্ধমানের এক ব্যবসায়ী এই ভোজ দিলেন জনা তিরিশ সারমেয়কে। বাড়িতে নয়, পশুদের নিয়ে কাজ করা এক সংস্থার অফিসে শনিবার এ ভাবেই জন্মদিন পালন করলেন কাঞ্চননগরের বাসিন্দা সৌম্য চক্রবর্তী।
বোরহাটের বৃদ্ধা তৃপ্তি চক্রবর্তীর গড়ে তোলা ‘বর্ধমান সোসাইটি ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার’ নামে ওই সংস্থায় ৩২টি কুকুর, ৬টি বিড়াল রয়েছে। সেগুলির কোনওটি পথ দুর্ঘটনায় আহত, কোনওটি অসুস্থ। তাদের চিকিৎসা হয় এখানে। সদ্য বিবাহিত সৌম্যবাবু জানান, স্ত্রী শুভ্রার ইচ্ছাতেই এ ভাবে জন্মদিন পালন করলেন।
শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ মুরগির মাংস ও বেশ কয়েক প্যাকেট বিস্কুট নিয়ে সংস্থার অফিসে হাজির হন সস্ত্রীক সৌম্যবাবু। সেখানে আগেই কেক-মিষ্টির ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছিল। কেক কেটে, গান গেয়ে জন্মদিন পালনের পরে চক্রবর্তী দম্পতি ভাত-মাংস মেখে কুকুর ও বিড়ালদের পরিবেশন করেন। যে সব অসুস্থ কুকুরদের মাংস দেওয়া চিকিৎসকদের নিষেধ রয়েছে তাদের বিস্কুট দেওয়া হয়।
সৌম্যবাবু জানান, পশুদের প্রতি তার দুর্বলতা আছে। রাস্তায় আহত দু’টি কুকুরকে তিনি বাড়িতে রেখে সুস্থ করেছেন। স্ত্রী-ও পশুপ্রেমী। শুভ্রা বলেন, ‘‘জন্মদিনে ভাল খাবার আমরা নিজেরা খাই। সেটা হয়তো সারা বছরই আমরা খেতে পারি। কিন্তু এই সব আহত, অসুস্থ কুকুর, বিড়ালদের এক দিন জন্য ভাল ভাবে খাওনোর জন্যই এই দিনটি বেছে নেওয়া।’’
তাঁদের সংস্থায় এ ভাবে জন্মদিন পালন এটাই প্রথম বলে জানালেন তৃপ্তিদেবী। তিনি বলেন, ‘‘আগে কোনও দিন এই রকম আবেদন আসেনি। প্রথম যখন ওঁরা এই প্রস্তাব দেন, কিছুটা অবাকই হয়েছিলাম। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।’’ সংস্থার সদস্য রিনা দাঁ বলেন, ‘‘পথশিশু, দুঃস্থদের মধ্যে দান করে বা খাওয়ার ব্যবস্থা করে জন্মদিন পালনের রীতি রয়েছে। কিন্তু পশুদের সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠান প্রশংসনীয়।’’