পূর্ব বর্ধমানে নিজের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন এক যুবক। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
পৈতৃক সম্পত্তি থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হয়েছে! সেই রাগে রাতের অন্ধকারের নিজের বাড়িতে আগুন ধরালেন যুবক। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল সৎমায়ের। আশঙ্কাজনক বাবা এবং সৎভাই। জখম সৎবোন। ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের খণ্ডঘোষের উদয়কৃষ্ণপুরের পশ্চিমপাড়া। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত বাবুল মিস্ত্রিকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে ৫০ বছরের কৃষ্ণপদ মিস্ত্রি এবং পরিবারের সদস্যেরা ঘুমিয়েছিলেন। গভীর রাতে বাড়িটিতে আগুন লাগে। পরে অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা যায়। ধরা পড়েন কৃষ্ণপদের প্রথম পক্ষের ছেলে বাবুল। অভিযোগ, বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে বাড়ির সামনের দিকে পেট্রল ছড়িয়ে অগ্নিসংযোগ করেন তিনি। দরজায় বাইরে থেকে তালা দেওয়ায় বাড়ির ভিতরে থাকা কেউ-ই বার হতে পারেননি। আগুন দেখে গ্রামবাসীরা ছুটে গিয়েছিলেন কৃষ্ণপদের বাড়িতে। তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশের সঙ্গে উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছিলেন। কিন্তু বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে মারা যান বাবুলের সৎমা সন্ধ্যা মিস্ত্রি (৪২)। জখম হয়েছেন দুই সৎভাইবোন বাদল এবং সুমিত্রা মিস্ত্রি। আশঙ্কাজনক বাড়ির কর্তা অর্থাৎ, বাবুলের বাবা কৃষ্ণপদ।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানাচ্ছে, জমিজমা সংক্রান্ত অশান্তির কারণে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বাবুল। একই কথা জানান প্রতিবেশীরাও। সুব্রত মণ্ডল নামে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘রাত ২টো ৪০ মিনিট নাগাদ চিৎকার এবং ঝগড়ার আওয়াজ শুনে সকলে ছুটে গিয়েছিলাম। কৃষ্ণদের বাড়িতে গিয়ে দেখি, সকলেই অগ্নিদদ্ধ অবস্থায়। ওদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করি।’’ সুবল মণ্ডল নামে আর এক প্রতিবেশী জানান, পুলিশের কাছে বাবুল স্বীকার করেছেন যে ক্ষোভে ওই কাজ করেছেন।
খবর পেয়ে বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগ ও খণ্ডঘোষের যুগ্ম বিডিও জোৎস্না খাতুন। বর্ধমানের এসডিপিও (দক্ষিণ) অভিষেক মণ্ডল বলেন, ‘‘অভিযুক্ত বাবুল মিস্ত্রিকে পুলিশ আটক করেছে। তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দেড় কাঠা জমি নিয়ে বাবার সঙ্গে বিবাদ ছিল ছেলের। সেই আক্রোশে বাবুল মিস্ত্রি বাড়িতে আগুন লাগান বলে স্বীকার করেছেন।’’