অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শৌচাগার না থাকায় অনেক সময়েই পাশের বাড়িতে যেতে হয়। প্রতীকী চিত্র।
‘মিশন নির্মল বাংলা’ অভিযানে শৌচাগার তৈরির বিষয়ে একাধিকবার সচেতনতা প্রচারে নামতে দেখা গিয়েছে সাবেক বর্ধমানের প্রশাসনিক কর্তা থেকে, মন্ত্রী, সকলকেই। কিন্তু তার পরেও পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের অন্তত অর্ধেক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এখনও কোনও শৌচাগার নেই।
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, প্রতিটিতে গড়ে ৫০-র বেশি পড়ুয়া থাকে। এ ছাড়া এলাকার পাঁচ বছরের কমবয়সি শিশু ও প্রসূতিদের নামও নথিভুক্ত থাকে কেন্দ্রগুলিতে। শিশুদের পড়াশোনা, শিশু ও প্রসূতিদের পুষ্টিকর খাবার দিতে প্রায় প্রতি দিনই হেঁশেল চালু থাকে কেন্দ্রগুলির।
অথচ এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় শৌচাগারের ছবিটা শোচনীয় বলে অভিযোগ কর্মীদের। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, এমন কেন্দ্রও আছে, যেখানে একটিমাত্র শৌচাগার শিশু, প্রসূতি, শিক্ষিকা, কর্মী, সকলেই ব্যবহার করেন। এর ফলে সংক্রমণ-সহ নানা রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে বলে অভিযোগ।
দুর্গাপুরের মুচিপাড়ায় একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্নার কাজ করেন উষা বাউড়ি। তিনি জানান, কেন্দ্রে শৌচাগার না থাকায় অনেক সময়েই পাশের বাড়িতে যেতে হয়। একই হাল মায়াবাজার শিবমন্দির এলাকার তিনটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেরও। একটি মাত্র ঘরে কাজকর্ম চলে। এখানেও সকলকেই শৌচকর্মের জন্য মাঠে বা পাশের বাড়ি যেতে হয়। কুড়ুলিয়াডাঙা, এইচএসসিএল কলোনি, কাঁকসার গোপালপুর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কেন্দ্রগুলির হালও একই রকম। রাতুড়িয়া হাউসিং কলোনির কেন্দ্রে শৌচাগার রয়েছে। কিন্তু সেখানে দরজা নেই বলে জানান ওই কেন্দ্রের কর্মী কর্মী মালতি ঘোষ, তপতী মণ্ডলেরা। যদিও স্থানীয় কাউন্সিলর অরবিন্দ নন্দী জানান, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের অবশ্য দাবি, অধিকাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেরই নিজস্ব জায়গা বা ঘর না থাকায় শৌচাগার তৈরিতে সমস্যা হচ্ছে। তবে পশ্চিম বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘সব কেন্দ্রেই দ্রুত শৌচাগার তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যেখানে জায়গার সমস্যা, সেখানে অস্থায়ী শৌচাগার তৈরির কথা ভাবা হয়েছে। পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে একশো দিনের প্রকল্প থেকে দু’জন করে কর্মী দায়িত্বে থাকবেন।’’