জল-যন্ত্রণা জারি, বন্ধ হল স্কুলও

দুর্গাপুর শহরের নানা স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শেষ বার জল এসেছিল শুক্রবার। তা দিয়েই কোনও মতে শনিবার হাফ-বেলা কাজ চালানো গিয়েছে। রবিবার ছুটি থাকায় সমস্যা হয়নি। কিন্তু সোমবার ফের সমস্যা শুরু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ০১:০৩
Share:

ভিড়: রাস্তার পাশে পাইপলাইনের ভাল্‌ভ থেকে সামান্য জল বেরোচ্ছে। তা নিতেই লাইন ফরিদপুরে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান

ব্যারাজে মেরামতের কাজ শেষ হলেও গত কয়েক দিনের মতোই সোমবারও নির্জলা থাকল দুর্গাপুর। এমনকী এই পরিস্থিতিতে বেশ কিছু স্কুলও বন্ধ রাখা হয়। পিছিয়ে দেওয়া হয় পরীক্ষাও। গত দু’দিনের মতো এ দিনও ট্যাঙ্কারে করে জল পাঠিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে দুর্গাপুর পুরসভা ও ডিএসপি। কিছু এলাকায় জল সরবরাহও করা হয়। কিন্তু বাসিন্দাদের মতে, এ সবই প্রয়োজনের তুলনায় কম। তাই এ দিনও জল কিনে খেতে হয়েছে বলে জানান শহরবাসী।

Advertisement

দুর্গাপুর শহরের নানা স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শেষ বার জল এসেছিল শুক্রবার। তা দিয়েই কোনও মতে শনিবার হাফ-বেলা কাজ চালানো গিয়েছে। রবিবার ছুটি থাকায় সমস্যা হয়নি। কিন্তু সোমবার ফের সমস্যা শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে স্কুল চালু রাখা সম্ভব নয় বুঝে ছুটি দিয়ে দেন বেশ কিছু স্কুলের কর্তৃপক্ষ।

বেনাচিতির রামকৃষ্ণপল্লি বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষিকা সুতপা বকসী জানান, স্কুলে এমনিতেই কম জল আসে। কুয়োর জল মিড-ডে মিলের বাসন মাজা ও শৌচাগারের কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তা পানযোগ্য নয়। ওই স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানান, শনিবার প্রাথমিক বিভাগের মিড-ডে মিল রান্না হয়েছে। কিন্তু সোমবার সেখানে মিড-ডে মিল রান্নার পরে পানীয় জল শেষ হয়ে যায়। তাই স্কুল খোলা থাকলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে হয়েছে বলে জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ। ডিপিএল-র দুর্গাপুর গার্লস হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, জলের জোগান স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শুধু মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা হবে। বাকি কোনও ক্লাস চালু রাখা সম্ভব নয়। ওই স্কুলের শিক্ষিকারা জানান, এ দিন একাদশ শ্রেণির ষান্মাষিক পরীক্ষা ছিল। কিন্তু স্কুলে জল না থাকায় তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বুধবার। ডিএসপি টাউনশিপের হর্ষবর্ধন রোডের একটি বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুল, মেয়েদের একটি কনভেন্ট স্কুলও এ দিন ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বেশ কিছু প্রাথমিক স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রও জলের সমস্যা থাকায় বন্ধ করে দিতে হয় বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়।

Advertisement

গত কয়েক দিনের মতো জলের হাহাকার শহর জুড়েও। এ দিনও নানা এলাকায় জলের ট্যাঙ্কার পাঠানো হয় বলে জানায় দুর্গাপুর পুরসভা ও ডিএসপি। ট্যাঙ্কার দেখলেই এ দিনও বালতি হাতে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে শহরের নানা এলাকার বাসিন্দাদের। এ দিনও ২০ লিটার জলের জার বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। সিটি সেন্টারের বাসিন্দা রুম্পা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ভোগান্তি কিছুটা কমলেও এ ভাবে আর ক’দিন চলবে জানি না। জল কিনে খেতে হয়েছে।’’

তবে এ দিন সিটি সেন্টারে কিছুক্ষণের জন্য পানীয় জল সরবরাহ করা হয় বলে জানায় দুর্গাপুর পুরসভা। পুরসভা জানায়, জরুরি ভিত্তিতে কিছু পরিমাণ জল মজুত রাখা ছিল। এ দিন তাইই অল্প সময়ের জন্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া সোমবার বিকেলে ডিপিএল ও লাগোয়া এলাকাতেও অল্প সময়ের জন্য জল সরবরাহ করা হয়।

তবে ব্যারাজ সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরের পরে থেকে ফিডার ক্যানালে সামান্য পরিমাণে জল ঢুকতে শুরু করেছে। আজ, মঙ্গলবার সকাল থেকে শহরের জল-যন্ত্রণার নিরসন ঘটবে বলে প্রাথমিক অনুমান সেচ দফতরের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন