বেহাল: এই চিকিৎসালয়গুলিকে ঘিরেই উঠেছে প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসক থেকে কর্মচারী, সবাই একে একে অবসর নিচ্ছেন। কিন্তু শূন্য পদে নিয়োগ বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ পরিচালিত দাতব্য চিকিৎসালয়গুলির ছ’টি বাদে সবকটিই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর সেই বন্ধ ভবনগুলি অসামাজিক কাজকর্মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রিটিশ আমলে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড ২২টি এ ধরনের চিকিৎসালয় তৈরি করে। প্রতিটি কেন্দ্রে এক জন চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ও সাফাইকর্মী থাকতেন। সকাল আটটা-ন’টা থেকে দুপুর পর্যন্ত চলত রোগী দেখা। বিনামূল্যে ওষুধও দেওয়া হত। চিকিৎসা করাতে রোগীদের প্রথম বার দু’টাকা, পরে এক টাকা করে দিতে হতো। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন দেয় জেলা পরিষদ থেকে। ওষুধ দেয় স্বাস্থ্য দফতর।
কিন্তু গত কয়েক বছরে নতুন বা শূন্য পদে নিয়োগ না হওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। এর জেরে আউশগ্রাম, ভাতার, গোপীকান্তপুর, কাইগ্রাম, খণ্ডঘোষ, কুসুমগ্রাম, মাহাতা, মেরাল, ওরগ্রাম, সাতগেছিয়া, ঘোষ, হলদি, কাঁকসা, কালেশ্বর, নুদিপুর, পাল্লায় বিনা পয়সায় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
তবে পুরনো ভবনগুলিতে অসামাজিক কাজকর্ম চলছে বলে অভিযোগ। সাতগেছিয়ায় কাটোয়া-কালনা রোডের উপরে ব্রিটিশ আমলে তৈরি চিকিৎসালয়টি ভূতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। রাত বাড়লেই সেখানে অসমাজিক কাজকর্মের আখড়া বসে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ভবনের দরজা-জানলা পর্যন্ত চুরি গিয়েছে। একই হাল অন্যান্য কেন্দ্রগুলিরও।
বর্তমানে অমরপুর, জামনা, কলুই, মেড়তলা, নন্দাই ও পাঁচড়ায় চিকিৎসাকেন্দ্রগুলি টিমটিম করে চলছে বলে জানা গিয়েছে। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (জনস্বাস্থ্য) গার্গী নাহা বলেন, “চিকিৎসকের অভাবে ওই ছ’টি কেন্দ্র ফি দিন চালানো যায় না। সপ্তাহে দু-তিন দিন করে খোলা হয়।” বাসিন্দাদের দাবি, এই চিকিৎসালয়গুলি ফের পুরোমাত্রায় চালু করুক জেলা পরিষদ। পূর্ব বর্ধমানের জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু অবশ্য বলেন, ‘‘আমরাও চাই না দাতব্য চিকিৎসালয়গুলি বন্ধ থাকুক। এগুলি যাতে চালু করা যায়, তার জন্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে জানানো হয়েছে।”