পুরুষের শরীরে জরায়ু, ডিম্বাশয়? কী বলছে রিপোর্ট!

পরীক্ষা করানো হয়েছিল পুরুষের। কিন্তু রিপোর্টে উল্লেখ করা হল জরায়ু, ডিম্বাশয়ের। এক বেসরকারি রোগনির্ণয় কেন্দ্র বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সেই রিপোর্ট দেখে তাজ্জব হাসপাতালের চিকিৎসক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৬ ০৬:০৮
Share:

পরীক্ষা করানো হয়েছিল পুরুষের। কিন্তু রিপোর্টে উল্লেখ করা হল জরায়ু, ডিম্বাশয়ের। এক বেসরকারি রোগনির্ণয় কেন্দ্র বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সেই রিপোর্ট দেখে তাজ্জব হাসপাতালের চিকিৎসক। ঘটনাটি নিয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের (সিএমওএইচ) কাছে অভিযোগ করেছেন রোগীর পরিজনেরা। বর্ধমানের সিএমওএইচ প্রণবকুমার রায় বলেন, ‘‘আপাতত ক্লিনিকটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার পরে তদন্ত চলবে।’’

Advertisement

দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে মঙ্গলবার সকালে তলপেটের পরীক্ষার ওই রিপোর্ট দেখে ডাক্তার জানিয়ে দেন, ফের পরীক্ষা করাতে হবে। কিন্তু তার খানিকক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় অরুণ খা (৫৫) নামে ওই রোগীর। হাসপাতালের তরফে অবশ্য মৃত্যুর কারণ হিসেবে মস্তিষ্ক কাজ না করার কথা (এনসেফ্যালোপ্যাথি) জানানো হয়েছে। তবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্টটি নিয়ে তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীও বলেন, ‘‘এই ধরনের ভুল কোনও ভাবে কাম্য নয়। আমরা রিপোর্ট চেয়ে পাঠাব।’’

দুর্গাপুরের ইস্পাতনগরীর বি-জোনের বিদ্যাপতি রোডের বাসিন্দা অরুণবাবু একটি বেসরকারি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিলেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৪ জুন পেটে ব্যথা-সহ কিছু উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হন। হাসপাতালে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা চলছিল। সোমবার রোগীর ‘এনসিসিটি স্ক্যান অফ হোল অ্যাবডোমেন’ করানোর নির্দেশ দেন। হাসপাতালে এই পরীক্ষা হয় না। তাই পরিজনেরা হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ সিটি সেন্টারের অম্বুজা এলাকার ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান রোগীকে।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে রোগীর পরিজনেরা রিপোর্ট নিয়ে এলে চিকিৎসক দেখেন, সেটির দ্বিতীয় পাতায় জরায়ু, ডিম্বাশয়ের উল্লেখ রয়েছে। তখনই তিনি জানিয়ে দেন, এই রিপোর্ট দিয়ে চিকিৎসা সম্ভব নয়। নতুন করে পরীক্ষা করাতে হবে। এ নিয়ে টানাপড়েন চলার মাঝেই এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ অরুণবাবু মারা যান।

রোগীর মৃত্যুর পরেই বাড়ির লোকজন ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু করেন। হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস বিষয়টি জানার পরে সিএমওএইচ-এর কাছে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন তাঁদের। বিকেলে সেই অভিযোগ করা হয়। ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্ণধার অলোক মিত্র দাবি করেন, ‘‘ছাপার ভুলে (ক্লারিক্যাল মিস্টেক) এমন হয়েছে।’’ এর সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের কৈফিয়ৎ তলব করা হয়েছে বলে জানান তিনি। অরুণবাবুর স্ত্রী ছবিদেবী বলেন, ‘‘এত বড় ভুল কী ভাবে হতে পারে? দোষীদের শাস্তি চাই।’’ প্রতিবেশী অমিত রায় বলেন, ‘‘এত দায়সারা মনোভাব নিয়ে ক্লিনিক চলছে কী করে? অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ জেলাশাসক জানান, তদন্তের রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন