পুরসভায় সদস্যেরা। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়।
দলে রয়েছেন এক ক্যানসার আক্রান্ত সদস্য। অভিযোগ, তিনি দলে থাকলে ঋণ দেওয়া মুশকিল বলে জানিয়েছিল ব্যাঙ্ক। কিন্তু, সেই সদস্যের পাশে দাঁড়়াতে ব্যাঙ্কের ঋণই না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন গুসকরার একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা। এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে গুসকরা পুরসভা। যদিও ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সুদামকুমার মোদীর দাবি, এ ধরনের কোনও প্রস্তাব দেওয়া হয়নি ওই স্বনির্ভর দলকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গুসকরার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষপল্লিতে ১১ জন মহিলা বছর দুয়েক আগে ওই স্বনির্ভর দলটি তৈরি করেন। সেই দলের অন্যতম সদস্য দুলালি দাসের কয়েক মাস আগে ক্যানসার ধরা পড়ে। তিনি মুম্বইয়ে গিয়ে চিকিৎসাও করান। দলের সভানেত্রী উষা হেমব্রম অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার গুসকরার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় তাঁদের কয়েকজন প্রতিনিধি ‘ক্যাশ ক্রেডিট লোন’-এর জন্য আবেদন জানান। কথা প্রসঙ্গে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ দুলালিদেবীর রোগের কথা জানতে পারেন। তার পরেই ঋণ না দেওয়ার কথা জানানো হয় বলে অভিযোগ।
স্বনির্ভর দলের সদস্যদের দাবি, ঋণ পরিশোধে কোনও সমস্যা হবে না জানানো সত্ত্বেও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেননি। এর পরেই শুক্রবার তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, ওই ব্যাঙ্ক থেকে তাঁরা ঋণ নেবেন না। শুধু তাই নয়, দুলালিদেবীকে দল থেকে বাদ দেওয়ার বদলে তাঁর পাশে থেকে সব রকম সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। দলের সম্পাদক মিনু দাস জানান, ব্যাঙ্ক থেকে লাখ দেড়েক টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। ওই টাকায় তিন জন কাপড় ও গুঁড়ো মশলার ব্যবসা করতেন। ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্তের বিষয়টি তাঁরা গুসকরা পুরসভা কর্তৃপক্ষকেও জানান।
পুরসভার পূর্ত দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘যেখানে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর মনোবল বাড়ানোর দিকে জোর দেন চিকিৎসকেরা, সেখানে ব্যাঙ্কের এমন প্রস্তাবে তাঁর মনোবল ভেঙে পড়তে পারে।’’ ব্যবসার জন্য ওই দলের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন পুরপ্রধান বুর্দ্ধেন্দু রায়। তিনি বলেন, ‘‘মহিলারা মানবিকতা দেখিয়েছেন। তাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।’’