Kalna

এসটিকেকে রোড নিয়ে ক্ষুব্ধ মন্ত্রী, সরব বিজেপি

লকডাউনের কারণে ওই রাস্তা সংস্কারে দেরি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান ও কালনা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০০:০১
Share:

বিজেপির অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তার গর্তে পড়ে প্রাণও গিয়েছে এক জনের। পূর্বস্থলীর ছাতনি থেকে কালনার শেষ সীমান্ত পর্যন্ত এসটিকেকে রোডের হাল এমনই। তার মধ্যে কালনার একটি অংশের ২০ কিলোমিটার ‘বিপজ্জনক’। মঙ্গলবার রাস্তার কাজে ‘ঢিলেমি’ হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পূর্বস্থলী দক্ষিণের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। পূর্ত দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ারকে তিনি বলেন, ‘‘এর পরে ওই রাস্তায় এক জনও মারা গেলে, আপনাদের নামে এফআইআর করব।’’ ঘটনাচক্রে, এ দিন এসটিকেকে রোড সারাইয়ের দাবিতে অবরোধ-বিক্ষোভ করেছে বিজেপিও।

Advertisement

যদিও পূর্ত দফতরের কর্তাদের দাবি, লকডাউনের কারণে ওই রাস্তা সংস্কারে দেরি হয়েছে। তবে এখন সেই সব কাটিয়ে দ্রুত কাজ এগোচ্ছে।

এ দিন বর্ধমানে এসে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে ক্ষোভ উগরে দেন মন্ত্রী। দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ারকে ফোন করে বলেন, ‘‘রাস্তার উন্নয়নের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টাকা দিচ্ছেন। আর আপনারা সেই কাজে ঢিলেমি করছেন। এটা বরদাস্ত করব না।’’ জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী থেকে জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদেরও এসটিকেকে রোড সংস্কার যাতে দ্রুত গতিতে হয়, তা বিশেষ ভাবে নজর দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বলেন, ‘‘ওই রাস্তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলা পরিষদের তরফে পূর্ত দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যায়, ছাতনি থেকে কালনার পূর্ব সাতগেছিয়া পর্যন্ত এসটিকেকে রোডের ৫০ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ চলছে। তবে রাস্তা সংস্কার করতে গিয়ে যাতায়াতই বন্ধ হয়ে যাওয়ার জোগাড় হয়েছে, দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। বেশ কিছুটা রাস্তায় পিচ হলেও বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে কালনা শহর লাগোয়া রাস্তার অবস্থা একেবারে ‘মৃত্যুফাঁদ’। গত রবিবার ওই রাস্তার গর্তে পড়ে এক মোটরবাইক আরোহী ট্রাকে পিষ্ট হয়ে মারা যান। এ দিন সে প্রসঙ্গ তুলে মন্ত্রী বলেন, ‘‘ওই রাস্তা সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য ১৭৭ কোটি টাকা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। অথচ, পূর্ত দফতরের নিচুতলার এক শ্রেণির আধিকারিকের জন্য তার সুফল পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। সেই কবে থেকে বৈঠক-আলোচনা হচ্ছে।’’

পূর্ত দফতরের বর্ধমান সদর নর্থ ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জীব গড়াইয়ের দাবি, রাস্তার কাজ দেখভালের জন্য তিনি এসটিকেকে রোডে শিবির করে বসে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তার কাজ যথেষ্ট দ্রুত গতিতে চলছে। যে সব জায়গা খারাপ রয়েছে তা মেরামত করা হবে। পিচ হওয়ার পরেও গর্ত হয়ে গিয়েছে, এমন জায়গা মেরামত করা হবে।’’

রাস্তা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিরোধীরাও। সোমবার ওই রাস্তার বিপজ্জনক গর্তে ধানের চারা পুঁতে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল কংগ্রেস। এ দিন এই রাস্তার ধর্মডাঙা এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে, বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।

বেলা ১১টা নাগাদ বিজেপির নেতা-কর্মীরা কালনা শহরে ঢোকার মুখে হাটকালনা পঞ্চায়েতের ধর্মডাঙা এলাকায় অবরোধ শুরু করেন। তাঁদের দাবি, এক বছরের বেশি সময় ধরে রাস্তার হাল খারাপ। অল্প বৃষ্টি হলেই রাস্তার গর্তে গাড়ি পড়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। আবার বৃষ্টি না হলে ভাঙাচোরা রাস্তায় এত ধুলো উড়ছে যে পথ চলা দায়। সম্প্রসারণের কাজ শুরু হলেও তা সব জায়গায় হচ্ছে না, যেখানে হচ্ছে সেখানেও গতি ধীর, দাবি তাঁদের। বিজেপি নেতা সুশান্ত পাণ্ডে, পলাশ মল্লিকেরা বলেন, ‘‘মানুষ এই রাস্তায় পড়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। তাতেও হুঁশ ফিরছে না প্রশাসনের। গর্ত বোজানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা করা হচ্ছে না।’’ তাঁদের দাবি, পুজোর আগে রাস্তার কারণে হাজার হাজার মানুষ সমস্যায় পড়েছেন।

এ দিন আধ ঘণ্টা অবরোধ চলার পরে, কালনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশের তরফে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে অবরোধ ওঠে। জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি তথা তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডুর দাবি, ‘‘অতিবৃষ্টি এবং করোনা পরিস্থিতি না হলে এত দিনে রাস্তার কাজ অনেকটাই এগিয়ে যেত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন