দুশ্চিন্তার যাত্রা (১)

পর্যটনের মরসুমে ভিড় ট্রেনে সক্রিয় দুষ্কৃতীরা

আসানসোল ডিভিশনে চলন্ত ট্রেনে এই ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে গত বেশ কয়েক বছর ধরে। শুধু মাদক মেশানো খাবার খাইয়ে অচেতন করেই নয়, যাত্রীরা ঘুমিয়ে পড়ার পরে আসনের নীচে শিকলে বাঁধা ব্যাগপত্র সুকৌশলে যন্ত্রের সাহায্যে কেটে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে আকছার।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি।

দূরপাল্লার যাত্রায় মিশুকে সহযাত্রী পেয়ে খুশি হন অনেকেই। কথায়-কথায় জমে ওঠে আড্ডা। তারই ফাঁকে এক সঙ্গে চা-সহ নানা খাবারদাবার খাওয়াও হয়। তাতে যে কোনও বিপদ লুকিয়ে থাকতে পারে, সন্দেহ করেন না অনেকেই। আর অনেক সময়ে তাতেই ঘটে যায় বিপত্তি। কিছুক্ষণের মধ্যে অচেতন হয়ে পড়েন যাত্রী। জ্ঞান ফেরার পরে খেয়াল করেন, সঙ্গে থাকা যাবতীয় জিনিসপত্র উধাও। দেখা নেই সেই সহযাত্রীরও।

Advertisement

আসানসোল ডিভিশনে চলন্ত ট্রেনে এই ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে গত বেশ কয়েক বছর ধরে। শুধু মাদক মেশানো খাবার খাইয়ে অচেতন করেই নয়, যাত্রীরা ঘুমিয়ে পড়ার পরে আসনের নীচে শিকলে বাঁধা ব্যাগপত্র সুকৌশলে যন্ত্রের সাহায্যে কেটে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে আকছার। বারবার এমন ঘটনা ঘটতে থাকায় তদন্তে নেমে বেশ কয়েক জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে আরপিএফ। তবে এমন দুষ্কর্ম পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। রেলের আধিকারিকদের মতে, সে জন্য যাত্রীদের মধ্যে আরও বেশি সচেতনতা গড়ে তোলা প্রয়োজন।

আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে চলন্ত ট্রেনে কেপমারিতে জড়িত অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জেরা করে উদ্ধার হয় বেশ কিছু চোরাই ব্যাগ। আরপিএফের টাস্ক ফোর্সের দুই ইনস্পেক্টর দীপঙ্কর দে ও রাজীব মণ্ডলের দাবি, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুজোর সময় থেকে পরের কয়েক মাস ধরে নানা জায়গায় বেড়াতে যান বহু পর্যটক। দূরপাল্লার ট্রেনগুলিতে ভিড় বাড়ে। এই ভিড়ের সুযোগ নিয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে দুষ্কৃতীরা। আসানসোল হয়ে উত্তর ভারতের দিকে যাতায়াতকারী ট্রেনগুলিতে কেপমারের দৌরাত্ম্য বেশি দেখা যায় বলে আরপিএফের দাবি।

Advertisement

রেলের আসানসোল ডিভিশনের সিনিয়র সিকিয়োরিটি কমিশনার চন্দ্রভূষণ মিশ্র জানান, চলন্ত ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য ডিভিশনের তরফে টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হয়েছে। তার সদস্যেরা নজরদারি চালাচ্ছেন। তাতেই উঠে আসছে নানা তথ্য। টাস্ক ফোর্সের আধিকারিকদের দাবি, এই দুষ্কৃতীদের একটি বড় অংশের গোপন ডেরা কিউল, ঝাঁঝা ও যশিডি এলাকায়। চুরি-কেপমারি সেরে এই সব জায়গার আগে-পরে কোনও স্টেশনে নেমে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকে তাদের।

সিনিয়র সিকিয়োরিটি কমিশনার জানান, শিয়ালদহ-বালিয়া এক্সপ্রেস থেকে ব্যাগ চুরিতে অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করার পরে কিউল ও বেগুসরাইয়ের দু’টি ডেরা থেকে বেশ কিছু ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। ধৃতদের কাছে প্রচুর ঘুমের ওষুধও মেলে। সেপ্টেম্বরে বর্ধমান ও দুর্গাপুরের মাঝে বিভূতি এক্সপ্রেস থেকেও ব্যাগ চুরির অভিযোগে আরপিএফ দু’জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের কাছে হাওড়া থেকে যশিডি পর্যন্ত সাধারণ কামরায় ভ্রমণের টিকিট ছিল।

আরপিএফের টাস্ক ফোর্সের আধিকারিকদের দাবি, কী ভাবে ব্যাগ লোপাট করা হয়, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে সেই পদ্ধতিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন